নীরবে ছড়িয়ে পড়ছে ডেঙ্গু, ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টির সম্ভাবনা
টুইট ডেস্ক: সারাদেশে নীরবে ছড়িয়ে পড়ছে ডেঙ্গু জ্বর। কোনো বড় ঝড় না উঠলেও, এডিস মশার ছোট্ট ডানায় যেন বইছে এক অদৃশ্য বিপর্যয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুন-মাত্র ছয় মাসেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১০ হাজার ২৯৬ জন মানুষ। এর মধ্যে শুধু জুন মাসেই আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৯৫১ জন, মারা গেছেন ১৯ জন-যা আগের পাঁচ মাসের পুরো সংখ্যাকেও ছাড়িয়ে গেছে।
এই পরিসংখ্যান ভয় পাওয়ার মতো। কারণ, এবার খুব বেশি বৃষ্টি হয়নি। কিন্তু গরম আর আর্দ্রতা ছিল অনেক বেশি। এই দুটি পরিবেশই খুব পছন্দ এডিস মশার। তাই মশার সংখ্যা বেড়েছে, সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে ডেঙ্গুর সংক্রমণ। বিশেষজ্ঞদের মতে, এবার মশা যেন আগের চেয়ে দ্বিগুণ গতিতে ছড়াচ্ছে, আর সেই সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ছে ডেঙ্গুও।
ডেঙ্গু আর ঢাকায় সীমাবদ্ধ নেই। এবার রোগ ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে। বরগুনা, পটুয়াখালী, কুমিল্লা, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, রাজশাহীসহ নানা জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি। বরগুনায় এক জেলাতেই আক্রান্ত প্রায় ১,৪০০ জন। সারাদেশে আক্রান্তদের মধ্যে ৭৫ শতাংশই এখন ঢাকার বাইরে। অথচ এখনো অনেকেই মনে করেন, ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু হয় না। এই ভুল ধারণা মানুষকে আরও বড় বিপদে ফেলতে পারে-এমনই মনে করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
তারা আরও বলছেন, ২০২৩ সালের মতো ভয়াবহ পরিস্থিতি আবার ফিরে আসতে পারে। তখন সারা দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিল ৩ লাখ ২১ হাজার মানুষ, মারা গিয়েছিলেন ১ হাজার ৭০৫ জন। এবার যেভাবে রোগ ছড়াচ্ছে, তাতে আশঙ্কা বাড়ছে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, এখনই ডেঙ্গুকে ‘জরুরি জনস্বাস্থ্য পরিস্থিতি’ হিসেবে ঘোষণা দিয়ে দেশের সব জায়গায় একসাথে কাজ শুরু করা দরকার।
ডেঙ্গু পরীক্ষার খরচ যাতে মানুষের নাগালের মধ্যে থাকে, সেজন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নতুন করে পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করেছে। সরকারি হাসপাতালে এনএস১, আইজিজি, আইজিএম টেস্টের সর্বোচ্চ ফি ধরা হয়েছে ৫০ টাকা, আর বেসরকারি হাসপাতালে একই পরীক্ষার ফি ৩০০ টাকা। সিবিসি পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০০ টাকা। এই নিয়ম মানা না হলে বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলোকে শাস্তি পেতে হবে। এই ফি ছাড় ২০২৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।