তারেকের কণ্ঠে শহীদদের দাবি: রাত ৯:৪১-এ টুইট বার্তা

এটাই সময় শহীদদের ঋণ শোধের।

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান: রক্তের বিনিময়ে লেখা বাংলাদেশের গণতন্ত্রের নতুন অধ্যায়।

টুইট প্রতিবেদন: বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ ও বেদনাদায়ক অধ্যায় হিসেবে ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান। এই সময়টি শুধু একটি রাজনৈতিক প্রতিরোধ নয়, বরং রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের বিরুদ্ধে জনতার দৃপ্ত প্রতিরোধ, আত্মত্যাগ ও রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের এক অনন্য দৃষ্টান্ত।

গত ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ এক কঠোর ও দমনমূলক শাসনের অধীনে ছিল। এই সময়ে অগণিত নাগরিক, রাজনৈতিক কর্মী, ছাত্র, কৃষক, গার্মেন্ট শ্রমিক, নারী ও শিশু—সবাইই কোনো না কোনোভাবে নিখোঁজ, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা, অপহরণ ও কাঠামোগত নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘনের এই তালিকা দীর্ঘ এবং বেদনার।

২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্টে, এই অসন্তোষ চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে প্রচণ্ড গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। শুধুমাত্র এই দুই মাসেই ১,৫০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হন, যাদের মধ্যে অন্তত ৪২২ জন বিএনপি-সংশ্লিষ্ট বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। আহত হন ৩০,০০০ জনের বেশি, যাদের অনেকেই চিরতরে পঙ্গুত্ব বরণ করেন।

সবচেয়ে হৃদয়বিদারক দিক ছিল শিশুদের ওপর বর্বরতা। মাত্র ৩৬ দিনে ১৩৬ জন শিশু নিহত হয়। তাদের মধ্যে ছিল চার বছরের আব্দুল আহাদ এবং ছয় বছরের রিতা গোপ। এই নিষ্ঠুরতা বহু আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ও পর্যবেক্ষককে হতবাক করেছে। অনেকেই একে “সভ্য সমাজে অকল্পনীয়” আখ্যা দিয়েছেন।

এই গণঅভ্যুত্থান শুধু হঠাৎ সৃষ্ট একটি ঘটনা নয়—এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জনগণের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের ধারাবাহিকতা। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ, ৭ নভেম্বর ১৯৭৫-এর জাতীয়তাবাদী বিপ্লব, ১৯৯০ সালের স্বৈরাচারবিরোধী গণআন্দোলন—প্রত্যেকটি আন্দোলনের মূলেই ছিল গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা।

২০২৪ সালের এই বিদ্রোহেও শহীদ হয়েছেন আবু সাঈদ, মুগ্ধা, ওয়াসিম সহ অগণিত নাম না-জানা বীর। তাঁরা প্রাণ দিয়েছেন একটি মুক্ত, মানবিক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের স্বপ্নে।

আজ রাত ৯:৪১ মিনিটে (১ জুলাই ২০২৫), লন্ডন থেকে একটি টুইট বার্তায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন,

“জুলাই-আগস্টের শহীদদের আত্মত্যাগ বৃথা যাবে না। এই দেশের গণতন্ত্র, স্বাধীনতা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই আমরা থামাব না। বিজয় হবেই।”

তিনি লি‌খেন, এখন বাংলাদেশের সামনে রয়েছে একটি ঐতিহাসিক সুযোগ।
একটি আধুনিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক, জবাবদিহিমূলক এবং জনগণের ইচ্ছায় পরিচালিত রাষ্ট্র নির্মাণের সুযোগ। একটি এমন বাংলাদেশ, যেখানে সরকার গঠিত হবে জনগণের সরাসরি ও অবাধ ভোটে, এবং রাষ্ট্র হবে জনগণের কাছে দায়বদ্ধ।

এটাই সময় শহীদদের ঋণ শোধের।

গড়ে তু‌লো সেই বাংলাদেশ, যা হবে ন্যায়ভিত্তিক, মানবিক ও সত্যিকারের গণতান্ত্রিক।