রাশিয়ার বিমান উৎপাদনে বাধা নিষেধাজ্ঞা ও সংকট

রাশিয়া বিমান উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা, তবে অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত নিষেধাজ্ঞা ও সরবরাহ সংকট ব্যাহত করছে লক্ষ্য

বিশ্ব ডেস্ক: রাশিয়া দীর্ঘমেয়াদি বিমান শিল্পের আধুনিকায়ন ও উৎপাদন সম্প্রসারণে বড় পরিকল্পনা নিয়েছে। বিশেষ করে কজান এভিয়েশন প্ল্যান্টে নানা ধরনের স্ট্র্যাটেজিক বোমার ও যাত্রীবাহী বিমান উৎপাদন ও আধুনিকায়ন প্রকল্পকে বড় ধরনের টেকনিক্যাল ও অবকাঠামোগত সম্প্রসারণের মাধ্যমে এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

তবে পশ্চিমা দেশগুলোর অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত নিষেধাজ্ঞ, যন্ত্রাংশের ঘাটতি এবং শ্রমিক সংকট রাশিয়ার এই লক্ষ্য পূরণে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কজান এভিয়েশন প্ল্যান্টের সম্প্রসারণ

রাশিয়ার সরকারি প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, কজান এভিয়েশন প্ল্যান্টে ৫টি ভবন সম্প্রসারণ করা হয়েছে, যা মোট প্রায় ১৯,০০০ বর্গমিটার বাড়ানো হয়েছে। এখানে বর্তমানে Tu-160M, Tu-160M2, Tu-22M3 প্রভৃতি স্ট্র্যাটেজিক বোমার বিমানের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের হেলিকপ্টার উৎপাদন ও আধুনিকায়ন কাজ হচ্ছে।

উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা

রাশিয়া আগামী বছরগুলোতে এখানে যাত্রীবাহী Tu-214 বিমানের উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে।

২০২৫ সালের মধ্যে ৪টি Tu-214 বিমান নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। ২০২৬ সালে ৭টি, ২০২৭ সালে ১৭টি, ২০২৮ সাল থেকে বছরে ২৮টি বিমান উৎপাদনের লক্ষ্য ধরা হয়েছে।

এই প্রকল্পের জন্য প্রায় ১.২ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

তবে সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে কজান প্ল্যান্ট থেকে মাত্র ২টি Tu-160M2 এবং ২টি Tu-160M বিমানই সরবরাহ করা সম্ভব হয়েছে, যা পরিকল্পিত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় অনেক কম।

এদিকে রাশিয়ার বিমান শিল্পের এই সংকটের পেছনে মূল কারণ হিসেবে পশ্চিমা দেশগুলোর কড়া অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত নিষেধাজ্ঞা, প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশের অভাব এবং অভিজ্ঞ শ্রমিক সংকটকে দায়ী করা হচ্ছে। এসব বাধার কারণে প্ল্যান্টের উৎপাদন এবং আধুনিকায়নের গতি অনেকটাই কমে গেছে।

রাশিয়ার এই উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ তার সামরিক ও বেসামরিক বিমান শিল্পের স্বাবলম্বিতা নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এর মাধ্যমে রাশিয়া দীর্ঘমেয়াদে নিজস্ব উচ্চমানের যুদ্ধবিমান ও বেসামরিক বিমান উৎপাদন বাড়িয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা করতে চায়।

তবে অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত নিষেধাজ্ঞা ও সরবরাহ চেইনের বাধাগুলো কাটিয়ে ওঠা না গেলে, এই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নাও পেতে পারে।

তাই আগামী বছরগুলোতে রাশিয়ার বিমান শিল্পের অগ্রগতি বিশ্ব রাজনীতিতে এবং প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।