স্পেনে স্কুলগেটজুড়ে গাজার শিশুদের স্মরণে অভিভাবকদের মানবিক প্রতিবাদ

বিশ্ব ডেস্ক: স্পেনজুড়ে অসংখ্য স্কুলের সামনে এক ভিন্নধর্মী দৃশ্য দেখা যাচ্ছে—শত শত অভিভাবক শিশুদের স্কুলে পৌঁছে দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ছেন গাজার নিহত শিশুদের স্মরণে।

হাতে প্ল্যাকার্ড, চোখে অশ্রু আর মুখে একটাই বার্তা: “What’s happening there is genocide and we have to oppose this, whoever the victims are.” অর্থাৎ, “ওখানে যা ঘটছে তা গণহত্যা—আর আমরা এর প্রতিবাদ করতেই হবে, যেই হোক ভুক্তভোগী।”

গাজার চলমান সংকটে এখন পর্যন্ত হাজার হাজার শিশু নিহত হয়েছে। জাতিসংঘ ও অন্যান্য মানবাধিকার সংস্থা এই হত্যাকাণ্ডকে ‘শিশুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। এই অবস্থায় স্পেনের সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে অভিভাবকেরা শিশুদের নিরাপত্তা ও মানবতার পক্ষে দাঁড়াতে নিজেরাই আন্দোলনে নেমেছেন।

প্রতীকী প্রতিবাদ:

অভিভাবকেরা প্রতিদিন সকালবেলা শিশুদের স্কুলে দিয়ে স্কুলগেটের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকেন কয়েক মিনিট। কেউ মৌন অবস্থানে, কেউ শিশুহত্যার বিরুদ্ধে লেখা পোস্টার হাতে, কেউবা প্ল্যাকার্ডে গাজার শিশুদের নাম লিখে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। একাধিক শহরে এই কর্মসূচি ধারাবাহিকভাবে চলছে, মাদ্রিদ, বার্সেলোনা, সেভিয়া ও বিলবাওতে দৃশ্যমান হয়েছে এই মানবিক আন্দোলন।

কী বলছেন অভিভাবকেরা?

একজন মা বলেন, “আজ আমার সন্তান স্কুলে নিরাপদে আছে। কিন্তু গাজার একজন মা তা বলতে পারছে না। আমি চুপ থাকতে পারি না।”

আরেক অভিভাবক জানান, “এই নীরবতাই একদিন আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ বিপন্ন করবে। এখনই সময় কথা বলার।”

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া:

স্পেনের বামপন্থী দলগুলো এই প্রতিবাদকে সমর্থন জানিয়েছে। সরকারের কিছু মন্ত্রীও মানবিক উদ্বেগ প্রকাশ করে গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন। তবে, কূটনৈতিক চাপ ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির সমীকরণে স্পেন সরকার এখনো বড় ধরনের পদক্ষেপ নেয়নি।

সামাজিক মাধ্যমে প্রচার:

এই প্রতিবাদের ছবি ও ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। হ্যাশট্যাগ #StopKillingChildren, #GazaKidsMatter এবং #MothersForPeace ট্রেন্ড করছে স্প্যানিশ টুইটার ও ইনস্টাগ্রামে।

এই প্রতিবাদ শুধু গাজার শিশুদের জন্য নয়, বরং বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ, দখলদারিত্ব ও সহিংসতার শিকার শিশুদের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করছে। স্পেনের মায়েরা যেন পৃথিবীর সমস্ত মায়ের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছেন, যারা যুদ্ধ নয়, শান্তি চান—বিশেষত শিশুদের জন্য।

তথ্যসূত্র: আল জাজিরা, ইউএন রিপোর্ট, স্থানীয় সংবাদমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম।