প্রধানমন্ত্রিত্বে সর্বোচ্চ মেয়াদ ১০ বছর—বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত
টুইট ডেস্ক: বিএনপি স্থায়ী কমিটির সর্বশেষ বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ ১০ বছর বা দুই পূর্ণ মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী পদে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না-এ মর্মে সংবিধানে স্পষ্ট বিধান সংযোজনের প্রস্তাবকে দলটি সমর্থন করবে।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, যিনি লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রিত্বে সীমা নির্ধারণে ঐক্যমত
সংবিধান সংস্কার সংক্রান্ত জাতীয় ঐকমত্য গঠনের লক্ষ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে চলমান আলোচনার প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত আসে।
স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বৈঠকে তার সাম্প্রতিক আলোচনার সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন। ঐ আলোচনায় বিতর্ক হয়েছিল; একজন ব্যক্তি সংসদের দুই মেয়াদ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী হবেন কিনা। নাকি তিনি দুইবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে পারবেন, মেয়াদ যাই হোক।
বিএনপি নেতারা একমত হয়েছেন যে এ ধরনের বিভ্রান্তির পরিবর্তে সরাসরি “সর্বোচ্চ ১০ বছর” প্রধানমন্ত্রী থাকার সীমা নির্ধারণ করাই বেশি কার্যকর হবে।
জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল নিয়ে আপত্তি
বৈঠকে আরও সিদ্ধান্ত হয়, সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত “ন্যাশনাল কনস্টিটিউশনাল কাউন্সিল (এনসিসি)” গঠনের প্রস্তাবটি সংবিধানের মূল কাঠামোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং তা গ্রহণযোগ্য নয়।
বিএনপি মনে করে, প্রধান বিচারপতি ও অন্যান্য সাংবিধানিক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি এবং সংসদের ভূমিকা রয়েছে-একটি আলাদা কাউন্সিল গঠনের মাধ্যমে তা লঙ্ঘিত হতে পারে।
নারীদের জন্য ১০০ সংরক্ষিত আসন ও উচ্চকক্ষ প্রস্তাব
বিএনপি স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক সংস্কারে একমত হয়-নারীদের জন্য ১০০টি সংরক্ষিত আসন, সংসদের উচ্চকক্ষ গঠনে ১০০ জন সদস্য এবং প্রধান বিচারপতি নিয়োগে জ্যেষ্ঠতম দুই জনের মধ্য থেকে যেকোনো একজনকে নির্বাচন করার পক্ষে মত।
দেশের সংবিধান সংস্কার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে একটি জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠিত হয়েছে, যারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে বৈঠক করে প্রস্তাব চূড়ান্ত করছে। বিএনপি শুরু থেকেই এই প্রক্রিয়ায় সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছে এবং তাদের সংস্কারের রূপরেখা স্পষ্ট করছে।
বিএনপির এ সিদ্ধান্তগুলো স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে দলটি ভবিষ্যতের জন্য একটি সুষম, গণতান্ত্রিক এবং সীমাবদ্ধতার মধ্যে থাকা শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায়।
প্রধানমন্ত্রিত্বে মেয়াদ নির্ধারণ এবং নিয়োগের পদ্ধতিতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার দাবি রাজনৈতিক সংস্কারের কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে এসেছে।