যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করলেন খামেনি: হমকি দিয়ে বললেন, ইসরায়েল শাস্তি পাবেই
ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা ঘনিয়ে উঠছে: জাতির উদ্দেশে আয়াতুল্লাহ খামেনির হুঁশিয়ারি ভাষণ
বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ, সংঘর্ষের আশঙ্কা তীব্রতর
বিশ্ব ডেস্ক: ইসরায়েলের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যেই বুধবার জাতির উদ্দেশে একটি টেলিভিশন ভাষণ দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। ভাষণের শুরুতেই তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “ইসরায়েলকে তার ভুলের জন্য শাস্তি পেতেই হবে।”
শক্ত প্রতিক্রিয়া
খামেনি বলেন, “ইরান চাপিয়ে দেওয়া যেকোনো যুদ্ধের মতোই চাপিয়ে দেওয়া শান্তির বিরুদ্ধেও দৃঢ় অবস্থান নেবে। এই জাতি কারও চাপের মুখে কখনোই আত্মসমর্পণ করেনি এবং করবে না।”
তিনি যুক্তরাষ্ট্রকেও সরাসরি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, “মার্কিনদের জানা উচিত, যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো সামরিক হস্তক্ষেপ নিঃসন্দেহে অপূরণীয় পরিণতি বয়ে আনবে।”
ইরানের আত্মপরিচয় ও প্রতিরোধের বার্তা
খামেনি তাঁর বক্তব্যে ইরানিদের ইতিহাস ও সংগ্রামী মানসিকতার প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, “যারা ইরান ও এর ইতিহাস সম্পর্কে জানে, তারা জানে যে ইরানিদের হুমকির ভাষায় কোনো উত্তর পাওয়া যায় না।”
এই বক্তব্যে তিনি পরিষ্কারভাবে বোঝাতে চেয়েছেন, কোনো চাপ, হুমকি কিংবা চুক্তির মোড়কে আসা শান্তিও যদি জোরপূর্বক হয়, তাও ইরান মেনে নেবে না।
গত শুক্রবার (১৩ জুন ২০২৫) ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী ইরানের একটি নিরাপত্তা স্থাপনায় অতর্কিত বিমান হামলা চালায়। এতে অন্তত ১১ জন নিহত হয় বলে ইরানি গণমাধ্যম জানিয়েছে। হামলার প্রতিক্রিয়ায় তখনই কড়া বিবৃতি দিলেও, আয়াতুল্লাহ খামেনিকে জনসমক্ষে দেখা যায়নি।
আজকের (১৮ জুন) ভাষণ তার সেই ঘটনার পর প্রথম প্রকাশ্য প্রতিক্রিয়া।
হমকি দিয়ে বললেন, ইসরায়েল শাস্তি পাবেই।
যুদ্ধ ও শান্তি—দুটিই চাপিয়ে দিলে ইরান মেনে নেবে না।
যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করলেন: সামরিক হস্তক্ষেপের মূল্য ‘অপূরণীয়’ ।
বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ, জি-২০ নেতারা জরুরি আলোচনার ডাক দিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
বিশ্বজুড়ে কূটনৈতিক মহলে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে খামেনির এই বার্তা নিয়ে। জাতিসংঘ ইতোমধ্যে উত্তেজনা নিরসনের আহ্বান জানিয়েছে।
রাশিয়া ও চীন শান্তিপূর্ণ সমাধানের কথা বললেও, ইসরায়েল বলেছে—”আমরা আত্মরক্ষার অধিকার রাখি।”
সম্প্রচারের গুরুত্ব
ভাষণটি সরাসরি সম্প্রচার করে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম মেহের নিউজ এজেন্সি এবং প্রেস টিভি। ইরানের বিভিন্ন শহরে মানুষ রাস্তায় দাঁড়িয়ে বড় পর্দায় খামেনির বক্তব্য শুনতে দেখা যায়। ইসরায়েলের হামলার পর প্রথমবার জনসমক্ষে এলেন খামেনি।
পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে দৃষ্টি
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, খামেনির এই বক্তব্য ভবিষ্যতের একটি আরও বিস্তৃত প্রতিক্রিয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্ভাব্য পাল্টা পদক্ষেপ ও আন্তর্জাতিক সমর্থন নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে বিভিন্ন মিত্র দেশের সঙ্গে সংলাপ শুরু করেছে।