ইসরায়েলের অভ্যন্তরে ‘গভীর লক্ষ্যবস্তুতে’ হামলার প্রস্তুতি

চীন ও উত্তর কোরিয়ার সহায়তায় ১০০টিরও বেশি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ – ইসরায়েলের অভ্যন্তরে হামলার প্রস্তুতি?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিশ্ব রাজনীতিতে উত্তেজনার পারদ আবারও ঊর্ধ্বমুখী। সর্বশেষ গোপন সূত্র ও গোয়েন্দা প্রতিবেদন অনুযায়ী, উত্তর কোরিয়া আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ইরানকে ১০০টিরও বেশি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করতে যাচ্ছে।

এই অস্ত্রসম্ভার চীনের কার্গো বিমান ব্যবহার করে ইরানে পৌঁছানো হবে বলে জানা গেছে।

ইসরায়েলের অভ্যন্তরে ‘গভীর লক্ষ্যবস্তুতে’ হামলার প্রস্তুতি

সূত্র জানায়, এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ব্যবহারের উদ্দেশ্য হলো ইসরায়েলের অভ্যন্তরে স্ট্র্যাটেজিক টার্গেটগুলোতে আঘাত হানা — যার মধ্যে সামরিক ঘাঁটি, রাডার সিস্টেম, ও ডিফেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। ইসরায়েলের ডিপ ইনফ্রাস্ট্রাকচার টার্গেট করাকে কেন্দ্র করে এটি “pre-emptive offensive capability buildup” হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।

ইরানের অবস্থান:

ইরান সরকার এখনো এই বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি, তবে তাদের সাম্প্রতিক বক্তব্যে ইসরায়েলের প্রতি ‘গভীর প্রতিশোধ’ নেওয়ার হুমকি ছিল। বিশেষ করে গাজা ও সিরিয়ায় ইসরায়েলি অভিযানে নিহত ইরানি সামরিক উপদেষ্টাদের হত্যাকাণ্ডের পর তেহরান বেশ খোলাখুলিভাবে ‘সরাসরি প্রতিশোধ’-এর কথা বলছে।

চীনের ভূমিকা:

বিশ্লেষকদের মতে, চীনের কার্গো বিমান ব্যবহারের অনুমতি এবং সক্রিয় লজিস্টিক সহযোগিতা এই ঘটনার গুরুত্ব বহুগুণ বাড়িয়ে তুলেছে। যদিও চীন আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি, তবে এই ঘটনা তাদের মধ্যপ্রাচ্য কূটনীতির ‘নিরপেক্ষতা’ প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।

উত্তর কোরিয়ার অবদান:

উত্তর কোরিয়া ইরানকে আগে থেকেই ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি সরবরাহ করে আসছে। এবার বড় পরিসরে অস্ত্র সরবরাহ করার ফলে দুই দেশের সামরিক জোট শক্তিশালী হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এগুলো হয়তো KN-23 বা KN-25 টাইপের উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র হতে পারে।

এই ঘটনা ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র, ও তাদের মধ্যপ্রাচ্য মিত্রদের জন্য এক বড় ধরনের নিরাপত্তা হুমকি সৃষ্টি করতে পারে। একদিকে যেমন গাজা ও লেবাননে উত্তেজনা চলমান, তেমনি ইরান-ইসরায়েল ছায়াযুদ্ধ সরাসরি সংঘাতে রূপ নিতে পারে।

পরবর্তী সম্ভাব্য পদক্ষেপ:

ইসরায়েল তাদের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা (Arrow-3, David’s Sling) সক্রিয়ভাবে প্রস্তুত করছে।

যুক্তরাষ্ট্র হয়তো উপসাগরীয় অঞ্চলে তাদের নৌ ও বিমান উপস্থিতি বাড়াতে পারে।

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে এই বিষয়টি নিয়ে জরুরি বৈঠক ডাকা হতে পারে।

এই অস্ত্র পরিবহন যদি সত্যি ঘটে, তাহলে এটি মধ্যপ্রাচ্যে এক নতুন সামরিক ভারসাম্যহীনতা তৈরি করবে এবং ইসরায়েল-ইরান দ্বন্দ্ব সরাসরি যুদ্ধের পথে এগিয়ে যেতে পারে। বিশ্ব এখন অপেক্ষা করছে – এই ক্ষেপণাস্ত্র কূটনীতি সংঘাতে রূপ নেয় কি না।