বাড়ছে করোনা, শনাক্ত হচ্ছে নতুন ধরন
পদ্মাটাইমস ডেস্ক: করোনা কি একেবারে চলে গেছে? অনেকের মনেই এমন প্রশ্ন জাগে। দীর্ঘ সময় ধরে দেশে করোনার প্রকোপ না থাকায় এমন ভাবনাই স্বাভাবিক। তবে সম্প্রতি দেশে আবারও বাড়তে শুরু করেছে করোনার সংক্রমণ। নতুন একটি ধরন শনাক্ত হওয়ায় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ বাড়ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত এপ্রিল মাসে দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিল ২৩ জন। কিন্তু মে মাসে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৬ জনে। শুধু তাই নয়, বৃহস্পতিবার (৫ জুন) করোনায় আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানানো হয়।
শনাক্ত হয়েছে ‘এক্সএফজি’ ও ‘এক্সএফসি’ ভ্যারিয়েন্ট
আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) জানিয়েছে, মে মাসের শেষ সপ্তাহে দেশে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ২৫। এসব রোগীর বেশিরভাগই আক্রান্ত হয়েছেন করোনার নতুন ধরন XFJ ও XFC-তে। এই দুটি ধরনই অমিক্রনের ‘JN-1’ ভ্যারিয়েন্টের উপধরন।
আইসিডিডিআরবির ভাইরোলজি ল্যাবের প্রধান মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “আমরা এখন যে নমুনাগুলো পরীক্ষা করছি, তার মধ্যে অধিকাংশতেই XFJ ধরন পাওয়া যাচ্ছে। এই ধরনটির সংক্রমণ ক্ষমতা বেশি। স্বাস্থ্যবিধি না মানলে এটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। বিশেষ করে বয়স্ক ও দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্তরা ঝুঁকিতে আছেন।”
ভারতে ইতিমধ্যে NB.1.8.1 নামে করোনার নতুন একটি ধরন ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) জানায়, ২৩ মে পর্যন্ত বিশ্বের ২২টি দেশে এ ধরন শনাক্ত হয়েছে। সংক্রমণ হারও বাড়ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের প্রভাব বাংলাদেশেও পড়তে পারে।
টিকা নেওয়ার পরামর্শ
দেশে করোনার টিকা নেওয়ার হার অনেক কমে গেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত মাত্র ৪৩ জন টিকা নিয়েছেন, যাঁদের বেশিরভাগই বিদেশগামী।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক হোসেন বলেন,
“বয়স্ক ও জটিল রোগে আক্রান্তদের এখনই টিকা নেওয়া উচিত। পাশাপাশি মাস্ক ব্যবহার, হাত ধোয়ার মতো স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।”
টিকা রয়েছে, প্রচারে ঘাটতি
সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (EPI) প্রোগ্রাম ম্যানেজার এ এফ এম শাহাবুদ্দিন খান জানান, “সরকারের কাছে পর্যাপ্ত টিকা রয়েছে, তবে মানুষের আগ্রহ একেবারেই কম।”
তিনি বলেন, “টিকা দেওয়ার জন্য প্রচার দরকার, কিন্তু প্রচারের জন্য প্রয়োজনীয় বাজেট আমাদের হাতে নেই।”
২২ এপ্রিল এক সভায় ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী- যেমন ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে, গর্ভবতী নারী, স্বাস্থ্যকর্মী ও অল্প রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের আবারও টিকার আওতায় আনার সুপারিশ করা হয়েছে।