জেলব্রেক আতঙ্কে কাঁপছে পাকিস্তান
পাকিস্তানে জেল ভেঙে ২১৩ কয়েদির পলায়ন, দেশজুড়ে নিরাপত্তা অ্যালার্ট
বিশ্ব ডেস্ক: পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার একটি কেন্দ্রীয় কারাগারে সশস্ত্র মুখোশধারীদের সংঘবদ্ধ হামলায় জেল ভেঙে পালিয়েছে অন্তত ২১৩ জন কয়েদি। রুদ্ধশ্বাস এই ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার (১ জুন) গভীর রাতে। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একে একটি “সংগঠিত সন্ত্রাসী হামলা” বলে আখ্যায়িত করেছে।
নাটকীয় পালিয়ে যাওয়া ও সন্ত্রাসী হামলা
পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের সূত্র অনুযায়ী, মুখোশধারী সশস্ত্র হামলাকারীরা গভীর রাতে ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে কারাগারে হামলা চালায়। মূল প্রবেশদ্বার ভেঙে কয়েদিদের মুক্ত করে তারা। কয়েক মিনিটের মধ্যেই শতাধিক কয়েদি প্রাচীর টপকে পালিয়ে যায়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, কিছু কয়েদি কারাগারের পেছনের দেয়াল বেয়ে পালাচ্ছে এবং গুলির শব্দে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে আশেপাশের এলাকায়।
কুখ্যাত আসামিদের পলায়ন, জাতীয় নিরাপত্তা হুমকিতে
জেলার পুলিশ প্রধান মিরাজ খান জানিয়েছেন, “আমরা ইতোমধ্যে কারাগার ঘিরে ফেলে আশপাশের এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়েছি। পালিয়ে যাওয়া কয়েদিদের মধ্যে অন্তত ২০ জন দেশের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি।”
তিনি আরও বলেন, গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় ২৪ ঘণ্টার যৌথ অভিযান চালানো হচ্ছে এবং জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সরকারি প্রতিক্রিয়া ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে জানান, “এটি শুধু নিরাপত্তা ব্যর্থতা নয়, এটি একটি সুপরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলা। কারাগারের ভেতরের ও বাইরের জড়িতদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে।”
এই ঘটনার পর দেশজুড়ে জারি করা হয়েছে উচ্চমাত্রার নিরাপত্তা সতর্কতা। অতিরিক্ত পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। অন্য কারাগারগুলোতেও সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে যেকোনো পরিস্থিতিতে সহায়তার জন্য।
জনমনে আতঙ্ক, অভিযান চলমান
পালিয়ে যাওয়া কয়েদিদের ধরতে সারা প্রদেশে টানা অভিযান চালানো হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত কয়জনকে পুনরায় আটক করা সম্ভব হয়েছে, সে বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক তথ্য প্রকাশ করেনি পুলিশ।
নাগরিকদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে, তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আশ্বস্ত করেছে যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।