জি.এম কাদেরের আস্ফালন: ইনু-মেনন গ্রেফতারের পরও কেন নিশ্চিন্ত!

টুইট ডেস্ক: গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা, জাতীয় পার্টির মাঠে সক্রিয়তা, আর এর পেছনে জি.এম কাদেরের গোপন শক্তি—এসব মিলিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রশ্ন উঠেছে: কার ছত্রছায়ায় এই দাপট?

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও সাবেক ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর সম্প্রতি তার ফেসবুক পেজে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পোস্টের মাধ্যমে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক বিভিন্ন ইস্যুতে বক্তব্য রেখেছেন।

শনিবার (৩১ মে) বরিশালসহ দেশের কয়েকটি জেলায় জাতীয় পার্টি (জাপা) ও আওয়ামী লীগ একসাথে মিছিল করে। একই সময় বরিশালে সড়কের পাশে বসে থাকা গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় জাপা-লীগ কর্মীরা। এই হামলায় কয়েকজন গুরুতর আহত হয়ে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এই ঘটনার ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, একজন গণঅধিকার কর্মীকে ঘিরে ধরে পিটাতে দেখা যায় একদল লোককে, যাদের চিহ্নিত করা হয়েছে জাপা ও আওয়ামী লীগের স্থানীয় কর্মী হিসেবে।

জি.এম কাদের এত সাহস পান কোথা থেকে?

ইনু, মেনন, সৈয়দ আবুল মকসুদসহ অনেক বাম নেতা একে একে গ্রেফতার হচ্ছেন। অথচ জি.এম কাদেরের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকা সত্ত্বেও তিনি প্রকাশ্যে সভা-মিছিল করছেন, মিডিয়ায় আওয়াজ তুলছেন, এমনকি পুলিশের নিরাপত্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন—এটাই সাধারণ জনগণের মনে সন্দেহ জাগিয়েছে।

জাতীয় পার্টির একটি অভ্যন্তরীণ সূত্র দাবি করেছে, জি.এম কাদের নিয়মিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে ফোনে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। শুধু তাই নয়, পাশের দেশের গোয়েন্দা সংস্থার পরামর্শে মাঝে মাঝে মিডিয়ায় বক্তব্য দিয়ে পরিস্থিতি প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন।

এই সূত্র আরও জানায়, সরকারের অভ্যন্তরে থাকা কিছু প্রভাবশালী কর্মকর্তার সহায়তায় জাতীয় পার্টি আবার মাঠে সক্রিয় হচ্ছে এবং স্থানীয় প্রশাসনকে ব্যবহার করে বিরোধী কণ্ঠ দমন করার চেষ্টা করছে।

গণঅধিকার পরিষদের প্রতিক্রিয়া ও দাবি

গণঅধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়:

“এটা স্পষ্ট যে, সরকার ও তার দোসররা গণআন্দোলনের ভয়ে জাতীয় পার্টিকে ‘ব্যাকআপ ফোর্স’ হিসেবে ব্যবহার করছে। ইনু-মেননের মতো নেতারা গ্রেফতার হলেও, জি.এম কাদেরের মতো চিহ্নিত ফ্যাসিস্ট দোসররা কিভাবে নিরাপদে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তা জনগণের বোধগম্য নয়।”

তারা আরও বলেন:

“জি.এম কাদেরসহ ফ্যাসিবাদী অপশক্তির বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রশাসনের গোপন আঁতাত ভেঙে দিতে হবে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আপোষহীন প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।”

জাতীয় পার্টি যেন এক ‘ছায়া-মিত্র’ হিসেবে কাজ করছে, এমন বিশ্লেষণও ঘুরে বেড়াচ্ছে রাজনৈতিক মহলে। বিরোধী দলের নামে এদের মদদ দিয়ে সরকার জনগণের ক্ষোভ প্রশমিত করতে চাইছে কি না, সেই প্রশ্ন এখন অনেকের মুখে মুখে।