কারাবন্দী থেকেও জামায়াতের শীর্ষ ফোরামে এ টি এম আজহার
টুইট ডেস্ক: একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে প্রায় ১৩ বছর কারাবন্দী থাকার পর মুক্তি পেয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলাম। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সর্বসম্মত রায়ে তাঁকে খালাস দেওয়ার পর গত ২৮ মে তিনি মুক্তি পান।
মুক্তির পর থেকেই গুঞ্জন শুরু হয় যে তিনি জামায়াতের পরবর্তী আমির হতে যাচ্ছেন। যদিও দলীয় সূত্র বলছে, বর্তমান গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এ মুহূর্তে তাঁর আমির হওয়া সম্ভব নয়।
মুক্তি পাওয়ার পর তাঁকে রাজধানীর মগবাজারে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে একটি কক্ষ দেওয়া হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত তাঁকে কোনো দলীয় পদে নিযুক্ত করা হয়নি।
অবশ্য, কারাবন্দী অবস্থায়ও তিনি নিয়মিতভাবে জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়ে আসছেন।
শূরার সদস্য নির্বাচিত হওয়ার প্রক্রিয়া
জামায়াতের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তিন ধাপে কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য নির্বাচন করা হয়:
প্রথম ধাপে, দেশের রুকনরা ভোট দিয়ে বিভিন্ন জেলা থেকে সদস্য নির্বাচন করেন।
দ্বিতীয় ধাপে, নির্বাচিত সদস্যদের গোপন ভোটে ৩০ জন কেন্দ্রীয় নেতা শূরায় যুক্ত হন। এটিএম আজহার এই পর্যায়ে নির্বাচিত হন।
তৃতীয় ধাপে, দলের আমির পরামর্শক্রমে আরও কিছু সদস্য (প্রায় ৫ ভাগ) শূরায় অন্তর্ভুক্ত করেন।
বর্তমানে শূরার সদস্য সংখ্যা প্রায় ৩০০ জন।
নায়েবে আমির হওয়ার সম্ভাবনা
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এ টি এম আজহারুল ইসলামকে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। বর্তমানে তিনজন নায়েবে আমির আছেন:
মুজিবুর রহমান
সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের
আ ন ম শামছুল ইসলাম
গঠনতন্ত্রে নায়েবে আমিরের সংখ্যা নির্ধারিত নয়, বরং “প্রয়োজনীয় সংখ্যক” বলা আছে।
আমির নির্বাচনের নিয়ম ও সম্ভাবনা
বর্তমান আমির ডা. শফিকুর রহমান ২০২৩-২০২৫ মেয়াদে নির্বাচিত। তাঁর মেয়াদ শেষ হবে ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫।
পরবর্তী আমির নির্বাচনে তিনজনের একটি সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা শূরার সদস্যদের ভোটে নির্ধারিত হয় এবং রুকনরা ওই তালিকা থেকে (বা ইচ্ছানুযায়ী বাইরে থেকে কাউকে) ভোট দেন।
অর্থাৎ, এ টি এম আজহার আমির হতে চাইলে তাঁকে এই নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আসতে হবে।
শপথ নেওয়ার বিষয়
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, শূরার সদস্যদের শপথ নিতে হয়। কারাগারে থাকার কারণে এখনও এ টি এম আজহার শপথ নেননি।
শপথ নেওয়ার পর তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো পদে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। এ বিষয়ে জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিম বলেন:
“তিনি মাত্রই মুক্তি পেয়েছেন। এখন চিকিৎসা ও বিশ্রামের প্রয়োজন রয়েছে। আমিরে জামায়াত পরামর্শক্রমে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।”