বিএমডিএ চেয়ারম্যান নিয়োগে জল্পনা-কল্পনা ও তদবিরের তোড়জোড়

নিজস্ব প্রতিবেদক: বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) চেয়ারম্যানের পদটি বর্তমানে শূন্য। গত ২৪ মে সংস্থার চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান ইন্তেকাল করার পর থেকেই শুরু হয়েছে জল্পনা-কল্পনা, তদবির ও অভ্যন্তরীণ তৎপরতা। কে হবেন পরবর্তী চেয়ারম্যান -এ নিয়ে দপ্তরজুড়ে আলোচনা চলছে, বেড়েছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের লবিংও।

বিএমডিএ’র প্রশাসনিক কাঠামোয় চেয়ারম্যান পদটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। বরেন্দ্র অঞ্চলের পানি ব্যবস্থাপনা, কৃষি উন্নয়ন ও অবকাঠামোগত পরিকল্পনায় এই পদে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন চেয়ারম্যান। ফলে সংশ্লিষ্ট মহল চান, একজন দক্ষ, অভিজ্ঞ ও দুর্নীতিমুক্ত ব্যক্তি যেন এ পদে নিয়োগ পান।

সূত্র জানায়, বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের তিনজন সদস্যের মধ্যে একজনের নাম আলোচনা ও সম্ভাবনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর মত, বোর্ড সদস্যরাই সংস্থার কাঠামো, কার্যক্রম ও লক্ষ্য সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত থাকেন। তাই সাধারণত বোর্ডের অভ্যন্তর থেকেই চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার রীতি রয়েছে।

তবে পদপ্রত্যাশীদের তালিকায় বোর্ডের বাইরের প্রার্থীরাও রয়েছেন। স্থানীয় রাজনৈতিক মহলের একাধিক পক্ষ ইতোমধ্যে নিজ নিজ পছন্দের প্রার্থীকে নিয়ে তদবির শুরু করেছেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে বলেও জানা গেছে।

এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,

“আমরা এমন একজনকে চাই, যিনি রাজনৈতিক চাপের বাইরে থেকে প্রতিষ্ঠানটির ভবিষ্যৎ উন্নয়নের কথা ভেবে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।”

বিশ্লেষকরা বলছেন, বরেন্দ্র অঞ্চলের টেকসই উন্নয়নের জন্য বিএমডিএ’র নেতৃত্বে থাকা ব্যক্তির নীতিগত সততা, প্রশাসনিক দক্ষতা এবং জনগণের সঙ্গে কার্যকর সংযোগ থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অন্যথায় প্রকল্প বাস্তবায়নে দুর্নীতি, রাজনৈতিক প্রভাব এবং জনস্বার্থ উপেক্ষার ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।

বিএমডিএ’র প্রধান কার্যালয় রাজশাহীতে অবস্থিত। এজন্য অনেকেই মনে করেন, রাজশাহী বা আশপাশের জেলা থেকে কেউ চেয়ারম্যান হলে দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনায় সুবিধা হবে।

বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) ১৯৯২ সালে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর আগে ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) আওতায় ‘বরেন্দ্র সমন্বিত এলাকা উন্নয়ন প্রকল্প’ চালু হয়, যা ১৯৯০ সালে শেষ হয়। ওই প্রকল্পের সফলতার ভিত্তিতেই গঠিত হয় বিএমডিএ। এর মূল কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে- সেচ ব্যবস্থার সম্প্রসারণ, খাল ও পুকুর পুনঃখনন, সড়ক নির্মাণ, বনায়ন এবং কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির নানা পদক্ষেপ।

চেয়ারম্যান হিসেবে সর্বশেষ দায়িত্ব পালন করেন ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান। এর আগে তিনি বিএমডিএ’র নির্বাহী পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর নেতৃত্বে বরেন্দ্র অঞ্চলে সেচ ব্যবস্থার উন্নয়ন, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি এবং অবকাঠামো উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়।

কে হবেন বিএমডিএ’র পরবর্তী চেয়ারম্যান- তা এখনো নির্ধারিত নয়। তবে দপ্তরের ভেতরে-বাইরে, রাজনীতিক থেকে আমলা সব মহলের নজর এখন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের দিকে।