ভারতীয় পুশ-ইনে গর্জে উঠল বোরইবাড়ি! বিজিবি-গ্রামবাসীর একাত্ম প্রতিরোধ

বোরইবাড়ি সীমান্তে নতুন উত্তেজনা: বিএসএফের গুলিবর্ষণ, পুশ-ইন চেষ্টায় গ্রামবাসীর প্রতিরোধ

টুইট ডেস্ক: বোরইবাড়ি সীমান্তে (কুড়িগ্রাম) ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (BSF) ও বাংলাদেশের বর্ডার গার্ড (BGB)–এর মধ্যে আবারও উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। সোমবার দুপুরে বিএসএফ ১৪ জন ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে জোরপূর্বক পুশ-ইন করার চেষ্টা করে এবং এ সময় চার রাউন্ড গুলি ছোড়ে। পাশাপাশি ভারতীয় ড্রোনও সীমান্তে উড়তে দেখা যায়। পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, এবং ২০০১ সালের ঐতিহাসিক সংঘর্ষের স্মৃতি আবারও আলোচনায় ফিরে আসে।

কী ঘটেছে?

ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন ভারতীয় সীমান্তরক্ষীরা ১৪ জন ভারতীয় নাগরিককে পুশ-ইন করতে চায়। বাংলাদেশি সীমান্তরক্ষীরা বাধা দিলে বিএসএফ চার রাউন্ড গুলি ছোড়ে এবং আশপাশের এলাকায় ড্রোন মোতায়েন করে নজরদারি বাড়ায়।

BGB দ্রুত জিরো লাইনে অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করে অবস্থান নেয়। আশপাশের স্থানীয় গ্রামবাসীরাও পরিস্থিতি দেখে সমবেত হয়ে বিএসএফের এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে।

২০০১-এর পুনরাবৃত্তি?

২০০১ সালের এপ্রিলে একই সীমান্তে সংঘর্ষে ১৬ বিএসএফ সদস্য নিহত হয়েছিল, যেটি এখনো দুই দেশের সীমান্ত ইতিহাসে অন্যতম রক্তক্ষয়ী ঘটনা হিসেবে বিবেচিত। এবারও বোরইবাড়ির নাম শুনেই মানুষের মধ্যে সেই সময়কার আতঙ্ক ফিরে এসেছে।

বিজিবি’র অবস্থান

এক প্রতিক্রিয়ায় সীমান্তে দায়িত্বরত এক বিজিবি কর্মকর্তা বলেন, “আমরা আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন মেনে চলছি। বিএসএফ কোনো রকম একতরফা সিদ্ধান্ত নিলে তার যথাযথ জবাব দেওয়া হবে।” তিনি আরও জানান, সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে টহল জোরদার করা হয়েছে এবং সকল ইউনিটকে সতর্ক রাখা হয়েছে।

গ্রামবাসীরা জানায়, “আমরা নিজের জমি, নিজের দেশ রক্ষা করতে প্রস্তুত। ২০০১ সালে যেমন বিজিবির পাশে ছিলাম, এখনো আছি।”

বিশ্লেষকেরা বলছেন, ভারত সরকারের ‘পুশ-ইন’ নীতি এবং বিএসএফের একতরফা আগ্রাসন শুধু আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনই নয়, বরং দুই দেশের সম্পর্ককেও চরম বিপদের মুখে ফেলছে।

বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও সীমান্তজুড়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। বাংলাদেশ সরকার এবং আন্তর্জাতিক মহল সতর্ক দৃষ্টি রাখছে এই ঘটনায়। অতীতের মতো আরও একটি সংঘর্ষ যাতে না ঘটে, সে বিষয়ে কূটনৈতিক প্রচেষ্টাও শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।

এই ঘটনাটি বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত রাজনীতির নতুন মোড় নিতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।