পুশ-ইন অগ্রহণযোগ্য: সেনাবাহিনীর হুঁশিয়ারি

টুইট প্রতিবেদন: সম্প্রতি ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে অবৈধভাবে অবস্থানরত বিদেশিদের চিহ্নিত করে তাদের ফেরত পাঠানোর অভিযানে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে। ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের (MHA) নির্দেশে ২০২৪ সালের আগস্টে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর থেকেই এই অভিযান শুরু হয় এবং তা আরও জোরদার হয় কাশ্মীরের পাহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর।

ভারতের এক কর্মকর্তা The Hindu পত্রিকাকে জানান, “যারা ফেরত পাঠানো হচ্ছে, তাদের বায়োমেট্রিকস সংগ্রহ করা হচ্ছে যাতে তারা আবার দেশে প্রবেশ করতে না পারে এবং আধারসহ কোনো সরকারি পরিচয়পত্রের জন্য নিবন্ধন করতে না পারে। এসব তথ্য আধার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শেয়ার করে একটি ব্ল্যাকলিস্ট তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

এই পদক্ষেপের বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে বাংলাদেশে। ২৬ মে, সোমবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মিলিটারি অপারেশনস ডিরেক্টরেটের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম-উদ-দৌলা বলেন, “পুশ-ইন সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য।” তিনি আরও বলেন, “এই ইস্যুতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছে। প্রয়োজনে সরকার নির্দেশ দিলে সেনাবাহিনীও তৎপর হবে। তবে আপাতত বিজিবি আন্তর্জাতিক প্রটোকল মেনেই দায়িত্ব পালন করছে।” (সূত্র: The Daily Star, বাংলাদেশ)

বিশ্লেষকদের মতে, ভারত যেভাবে ‘পুশ-ইন’ পদ্ধতিতে বাংলাদেশে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের ফেরত পাঠাচ্ছে, তা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে এবং কোনো প্রতিবেশী রাষ্ট্রের প্রতি এমন আচরণ অমার্জনীয়। একজন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক বলেন, “যদি কেউ প্রকৃত বাংলাদেশি না হয়, তবে তাকে বাংলাদেশে পাঠানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই। শুধুমাত্র সন্দেহের বশে নাগরিক ফেরত পাঠানো একপাক্ষিক ও অনৈতিক।”

বাংলাদেশ সরকারও বারবার ভারতকে অনুরোধ করেছে যে যেকোনো অনুপ্রবেশের অভিযোগ প্রমাণসহ উপস্থাপন করতে হবে, এবং তারপরে যৌথভাবে যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে ব্যবস্থা নিতে হবে।

এই ঘটনার পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য এবং জনসংখ্যা পুনর্বিন্যাসের মত বিতর্কিত অভিপ্রায় থাকার আশঙ্কা করছেন অনেকেই। বিশেষ করে ভারতের উত্তর-পূর্ব ও সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোতে এধরনের অভিযান বাড়ছে। ভারতের অনেক মানবাধিকার সংগঠনও সরকারের এই কঠোর অবস্থানের বিরোধিতা করেছে।

বাংলাদেশ সবসময় শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান এবং গঠনমূলক কূটনৈতিক সম্পর্কের পক্ষে। কিন্তু ভারতের তরফে একতরফা সিদ্ধান্ত ও বলপ্রয়োগ আন্তর্জাতিক প্রথা ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে বিপন্ন করে।

‘পুশ-ইন’ কৌশল বন্ধ করে যৌথ সমন্বয় ও বৈধ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানানো হচ্ছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে।