চট্টগ্রামে কেএনএফের ২০ হাজার ইউনিফর্ম জব্দ: পাহাড়ে সশস্ত্র বিস্তার নিয়ে উদ্বেগ
টুইট ডেস্ক: চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন নয়ারহাট এলাকার ‘রিংভো অ্যাপারেলস’ নামক একটি পোশাক কারখানা থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামের সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) জন্য তৈরি করা ২০ হাজার ৩০০ পিস ইউনিফর্ম জব্দ করেছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ।
অভিযানে কারখানার মালিক সাহেদুল ইসলামসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার অন্য দুইজন হলেন গোলাম আজম ও নিয়াজ হায়দার, যারা ইউনিফর্ম তৈরির কার্যাদেশ এনেছিলেন। এ ঘটনায় বায়েজিদ বোস্তামী থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় রাঙামাটির কাপ্তাইয়ের মংহ্লাসিন মারমা নামের একজনকেও আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, গত মার্চ মাসে দুই কোটি টাকার চুক্তিতে ইউনিফর্মগুলো তৈরির কাজ দেওয়া হয়। কেএনএফ সদস্যরা কাপড় সরবরাহ করেন এবং চলতি মাসে পোশাকগুলো সরবরাহের কথা ছিল।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, এত বিপুল পরিমাণ ইউনিফর্ম তৈরির পেছনে কেএনএফের বড় ধরনের পরিকল্পনা থাকতে পারে। যদি প্রতিজনের জন্য দুটি করে ইউনিফর্ম ধরা হয়, তাহলে সদস্য সংখ্যা ১০ থেকে ১৫ হাজার হতে পারে। কেএনএফের অর্থের উৎস নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
সেনাবাহিনীর মিলিটারি অপারেশনের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজিম উদ দৌল্লাহ বলেন, বম কমিউনিটির মোট জনসংখ্যা ১০ থেকে ১২ হাজার। সে অনুযায়ী ২০ হাজারের বেশি ইউনিফর্ম কেএনএফের কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেনাবাহিনী বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে।
কারখানার কর্মীরা জানিয়েছেন, তারা জানতেন না ইউনিফর্মগুলো অবৈধ সংগঠনের জন্য তৈরি হচ্ছে। তারা সাব-কন্ট্রাক্টের কাজ করে থাকেন এবং অর্ডার অনুযায়ী কাজ করেছেন।
কেএনএফ ২০২২ সালের শুরুর দিকে পার্বত্য চট্টগ্রামে আত্মপ্রকাশ করে। তারা বম, পাংখোয়া, লুসাই, খিয়াং, খুমি ও ম্রোদের নিয়ে সংগঠন গঠন করে এবং পাহাড়ে ‘বম পার্টি’ নামে পরিচিতি পায়। সংগঠনটি চাঁদাবাজি, হত্যা, অপহরণসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
এই ঘটনায় পাহাড়ে কেএনএফের সশস্ত্র বিস্তার এবং তাদের অর্থের উৎস নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বিষয়টি গভীরভাবে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন।