নির্বাচন নিয়ে সেনাবাহিনীর ‘ক্ষমতা গ্রহণ’–সংক্রান্ত গুজব ভিত্তিহীন।

সরকারের সঙ্গে কোনো বিরোধ নেই, গুজবে কান না দিতে সেনাবাহিনীর আহ্বান

টুইট ডেস্ক: ঢাকা সেনানিবাসে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, সরকারের সঙ্গে তাদের কোনো বিরোধ নেই এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ সংক্রান্ত যেসব গুজব ছড়ানো হচ্ছে, তা ভিত্তিহীন।

সোমবার (২৬ মে) এই সংবাদ ব্রিফিংয়ে সেনা সদরের অপারেশনস্ পরিদফতরের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম-উদ-দৌলা বলেন, “সরকার ও সেনাবাহিনীর মধ্যে কোনো বিভেদ নেই। রাষ্ট্রের স্বার্থ, সার্বভৌমত্ব ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় সরকার এবং সেনাবাহিনী একসঙ্গে কাজ করছে।”

তিনি আরও বলেন, “সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেনাবাহিনীকে নিয়ে যে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে, তা সত্য নয়। দেশের স্বার্থের বাইরে গিয়ে সেনাবাহিনী কোনো সিদ্ধান্ত নেয় না, বরং জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়—এমন কোনো কর্মকাণ্ডে সেনাবাহিনী কখনও সম্পৃক্ত হয় না।”

সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন প্রসঙ্গেও প্রশ্নের মুখোমুখি হন কর্মকর্তারা। এ সময় সেনা সদরের কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, “ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন না হলে সেনাবাহিনী ক্ষমতা নেবে—এমন গুজব পুরোপুরি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। ক্ষমতা নেওয়ার কোনো ইচ্ছা সেনাবাহিনীর নেই। এই বিষয়ে অভ্যন্তরীণ কোনো আলোচনা বা পরিকল্পনাও হয়নি।”

সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে মাসব্যাপী পরিচালিত বিভিন্ন কর্মসূচির কথাও তুলে ধরা হয় ব্রিফিংয়ে। সেনা কর্মকর্তারা জানান, তারা নিয়মিত কার্যক্রম ও মানবিক সহায়তা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন এবং দেশের যে কোনো সংকটে প্রশাসনের সহযোগিতায় দায়িত্ব পালন করছেন।

সেনাবাহিনীর এই আনুষ্ঠানিক বক্তব্য মূলত তিনটি বিষয়ের প্রতি ইঙ্গিত দেয়-

গুজব প্রতিরোধ ও স্থিতিশীলতার বার্তা-

বিগত কিছুদিনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেনা হস্তক্ষেপ ও ক্ষমতা গ্রহণ সংক্রান্ত গুজব ছড়াতে দেখা গেছে। এই গুজব রাজনৈতিক অস্থিরতা বা জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে। সেনাবাহিনীর এই বক্তব্য গুজবের বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান এবং জনগণকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা।

অসামরিক সরকারের প্রতি আনুগত্যের পুনঃনিশ্চয়তা-

ব্রিফিংয়ের ভাষ্য অনুযায়ী সেনাবাহিনী জনগণের নির্বাচিত সরকারের অধীনেই কাজ করছে এবং করবে। এটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার প্রতি সেনাবাহিনীর শ্রদ্ধাশীল অবস্থানকে পুনঃনিশ্চিত করে।

ক্ষমতা গ্রহণের জল্পনা উড়িয়ে দেওয়া-

ডিসেম্বরে নির্বাচন না হলে সেনাবাহিনী ‘হস্তক্ষেপ’ করবে—এমন কথাকে সরাসরি ভিত্তিহীন বলে সেনা সদরের কর্নেল প্রত্যাখ্যান করেছেন। এতে সেনাবাহিনী তাদের নিরপেক্ষ অবস্থান রক্ষা করল এবং গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতার প্রতি অঙ্গীকার দেখাল।

বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীর এই বক্তব্য স্বস্তির বার্তা হিসেবে দেখা যেতে পারে। বিশেষ করে যখন সামাজিক মাধ্যমে নানা রকম গুজব ছড়াচ্ছে, তখন প্রতিষ্ঠানিকভাবে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এ ধরনের ব্যাখ্যা দেশব্যাপী উদ্বেগ কমাতে ভূমিকা রাখতে পারে।