১ জুন ঢাকায় চীন-বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলন: আসছেন ২৫০ চীনা বিনিয়োগকারী!

চীন-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অংশীদারত্বে নতুন মাইলফলক

এম বি আলম: বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা এবং বিনিয়োগ পরিবেশ সরেজমিনে পর্যালোচনার জন্য জুন মাসের শুরুতেই ঢাকায় আসছেন চীনের প্রায় ১০০টি কোম্পানির ২৫০ জন বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ী। বাংলাদেশ ও চীন সরকারের যৌথ আয়োজনে ঢাকায় ১ জুন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘চীন-বাংলাদেশ ব্যবসা ও বিনিয়োগ সম্মেলন’, যা দুই দেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতার নতুন দ্বার উন্মোচন করতে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা), বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং ঢাকায় চীনা দূতাবাসের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই দিনব্যাপী সম্মেলনের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও।

বেজা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, এই সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী চীনা ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ফরচুন ৫০০ তালিকাভুক্ত অন্তত ৬ থেকে ৭টি প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তারা থাকবেন। পাশাপাশি চীনের চারটি চেম্বার অব কমার্স-এর প্রতিনিধিরাও অংশ নেবেন।

এ ধরনের উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন বাংলাদেশে এই প্রথম, যেখানে এত বিপুলসংখ্যক চীনা ব্যবসায়ী একযোগে সফরে আসছেন। এর ফলে চীন-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অংশীদারত্বে একটি যুগান্তকারী ধাপ তৈরি হতে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছে বেজা।

এছাড়া জানা গেছে, প্রধান উপদেষ্টার সাম্প্রতিক চীন সফর এবং গত এপ্রিলের বিনিয়োগ সম্মেলনের ফলাফল হিসেবে এই আয়োজন সম্ভব হয়েছে।

এ সম্মেলনের লক্ষ্য—চীনা বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগে আগ্রহী করে তোলা, অবকাঠামো, উৎপাদন, তথ্যপ্রযুক্তি, নির্মাণ, রপ্তানি ও অন্যান্য খাতে যৌথ উদ্যোগের সুযোগ সৃষ্টি করা।

এই সম্মেলন এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক পরিবেশ চীন, ভারত ও বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। ভারতের আসাম রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা সম্প্রতি টুইটে বাংলাদেশকে ‘চিকেন নেক করিডর’ ইস্যুতে হুঁশিয়ার করে মন্তব্য করেন, যা আলোচনার ঝড় তোলে।

এই পটভূমিতে চীনের এত বিপুলসংখ্যক বিনিয়োগকারীর সফর কেবল অর্থনৈতিক নয়, কৌশলগত দৃষ্টিকোণ থেকেও গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হচ্ছে।

বাংলাদেশের বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ ও সরকারের নতুন কূটনৈতিক পদক্ষেপ চীনের সঙ্গে সম্পর্ককে আরও গভীর করতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে। এই সম্মেলন শুধু আর্থিক বিনিয়োগই নয়—চীন-বাংলাদেশ কৌশলগত অংশীদারত্ব, আঞ্চলিক সহযোগিতা এবং বহুপাক্ষিক বাণিজ্যের এক নতুন অধ্যায় সূচনার বার্তা দিচ্ছে।

১ জুনের এই সম্মেলন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন হয়ে থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বেজার কর্মকর্তারা।