স্টারলিংকের বাংলাদেশে যাত্রা
নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশে স্টারলিংকের আনুষ্ঠানিক যাত্রা দেশের ডিজিটাল অবকাঠামোয় একটি যুগান্তকারী পরিবর্তনের সূচনা করেছে। এই স্যাটেলাইট-ভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা দেশের প্রত্যন্ত ও ফাইবার-সংযোগবিহীন এলাকাগুলোর জন্য উচ্চগতির, নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
আজ মঙ্গলবার (২০ মে) স্টারলিংক বাংলাদেশে তাদের সেবা আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় দেশ হিসেবে স্টারলিংকের সেবা গ্রহণ করে। এই সিদ্ধান্তের পেছনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারপ্রধান মুহাম্মদ ইউনুসের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল, যিনি রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় ইন্টারনেট সংযোগ বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন।
স্টারলিংক বাংলাদেশে দুটি রেসিডেন্সিয়াল প্যাকেজ চালু করেছে-
Starlink Residence: মাসিক খরচ ৬,০০০ টাকা।
Residence Lite: মাসিক খরচ ৪,২০০ টাকা।
উভয় প্যাকেজের জন্য এককালীন সেটআপ যন্ত্রপাতির খরচ ৪৭,০০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই সেবাগুলোতে কোনো ডেটা বা গতি সীমাবদ্ধতা নেই; ব্যবহারকারীরা সর্বোচ্চ ৩০০ এমবিপিএস পর্যন্ত গতি উপভোগ করতে পারবেন।
প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্য ও কাভারেজ
স্টারলিংকের স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক উচ্চগতি ও নিম্ন ল্যাটেন্সি নিশ্চিত করে, যা ভিডিও স্ট্রিমিং, অনলাইন গেমিং এবং রিমোট ওয়ার্কের জন্য উপযোগী। বাংলাদেশে এই সেবা দেশের প্রায় সকল অঞ্চলে উপলব্ধ, বিশেষ করে দুর্গম ও ফাইবার-সংযোগবিহীন এলাকাগুলোতে।
সেবা গ্রহণের প্রক্রিয়া
বাংলাদেশি গ্রাহকরা স্টারলিংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে অর্ডার করতে পারেন।
Starlink.com ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন।
আপনার ঠিকানা দিয়ে সেবার প্রাপ্যতা যাচাই করুন।
পছন্দসই প্যাকেজ নির্বাচন করে অর্ডার সম্পন্ন করুন।
সেটআপ কিটের মধ্যে একটি স্যাটেলাইট ডিশ, রাউটার এবং প্রয়োজনীয় তারসহ অন্যান্য সরঞ্জাম অন্তর্ভুক্ত থাকে। ইনস্টলেশন প্রক্রিয়া সহজ; ব্যবহারকারীরা নিজেরাই এটি সম্পন্ন করতে পারেন।
সম্ভাব্য প্রভাব ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
স্টারলিংকের এই সেবা বাংলাদেশের ডিজিটাল খাতে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। বিশেষ করে এনজিও, উদ্যোক্তা, ফ্রিল্যান্সার এবং শিক্ষার্থীদের জন্য এটি একটি টেকসই ও দীর্ঘমেয়াদি সমাধান হতে পারে। ফাইজ আহমেদ তাইয়েব উল্লেখ করেছেন, “এটি প্রিমিয়াম গ্রাহকদের জন্য উচ্চমানের, দ্রুত এবং নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট নিশ্চিত করতে পারবে।”
স্টারলিংকের বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিক যাত্রা দেশের ডিজিটাল অগ্রযাত্রায় একটি মাইলফলক। এই সেবা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেট সংযোগের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে, যা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের অর্থনীতি, শিক্ষা এবং প্রযুক্তি খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।