ভারতের বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্র সরকার অবৈধ অভিবাসন প্রক্রিয়ায় সহায়তার অভিযোগে ভারতের একাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর।

নিষেধাজ্ঞার কারণ: অবৈধ অভিবাসন সহায়তা

সোমবার (১৯ মে) রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতীয় ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর মালিক, নির্বাহী ও শীর্ষ কর্মকর্তারা অবৈধভাবে অভিবাসনে সহায়তা করেছেন—এমন অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস জানান, “এই নিষেধাজ্ঞা অভিবাসন ও জাতীয়তা আইনের অধীনে আরোপ করা হয়েছে। আমাদের ভারতে অবস্থিত মার্কিন মিশনগুলোর কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

তবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়া ব্যক্তিদের সংখ্যা বা নাম প্রকাশ করেনি।

যেভাবে কাজ করেছে অবৈধ নেটওয়ার্ক

ট্যামি ব্রুস বলেন, “আমরা অবৈধ অভিবাসন নেটওয়ার্কগুলো বন্ধ করতে ট্রাভেল এজেন্সির মালিক ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যাচ্ছি।”

তবে এসব ট্রাভেল এজেন্সি কী ধরনের পন্থায় অবৈধ অভিবাসনে সহায়তা করেছে—তা বিস্তারিতভাবে প্রকাশ করা হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, ভিসার অপব্যবহার, ভুয়া ডকুমেন্টেশন বা ‘স্পনসরশিপ ফ্রড’-এর মতো কৌশল ব্যবহার করা হয়েছে।

ভারতীয় নাগরিকদের উদ্দেশে যুক্তরাষ্ট্রের হুঁশিয়ারি

এছাড়াও, ভারতের নাগরিকদের উদ্দেশে মার্কিন দূতাবাস একাধিকবার সামাজিক মাধ্যমে সতর্কবার্তা দিয়েছে। এতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ ভিসার সময়সীমা লঙ্ঘন করা যাবে না, বেশি দিন অবস্থান করলে স্থায়ীভাবে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি হতে পারে, এমনকি যুক্তরাষ্ট্র থেকে নির্বাসনের ঝুঁকিও তৈরি হবে

ট্রাম্প প্রশাসনের কড়া অভিবাসন নীতি ফিরে এলো?

এই পদক্ষেপ অনেকেই যুক্তরাষ্ট্রে আবারও কঠোর অভিবাসন নীতির প্রতিফলন হিসেবে দেখছেন। বিশেষ করে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়ে চালু হওয়া ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি আবার সক্রিয় হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ট্রাম্প প্রশাসন বিভিন্ন সময় অবৈধ অভিবাসন বিরোধী পদক্ষেপ যেমন—ভিসা স্ক্রুটিনি, নির্বাসন তৎপরতা এবং ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর ওপর নজরদারি—মূলধারায় নিয়ে এসেছিল। এবার সেই রকমই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।

এই নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্র-ভারত কূটনৈতিক সম্পর্কে সাময়িক টানাপোড়েন সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তবে মার্কিন প্রশাসন স্পষ্ট করে দিয়েছে, এটি ‘অবৈধ কার্যকলাপের বিরুদ্ধে নিয়মতান্ত্রিক ব্যবস্থা’, কোনো দেশের বিরুদ্ধে নয়।