সাবেক মেয়র আইভী কারাগারে
টুইট ডেস্ক: নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার মিনারুল ইসলাম হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, হত্যা মামলার আসামীর সাথে রাতভর দেন দরবার, দর কষাকষি শেষে সকালের নাস্তা শেষে জামাই আদর করে গ্রেফতার। ইতিহাসে বিরল!
গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া:
বৃহস্পতিবার (৮ মে) রাত সাড়ে ১১টার দিকে শহরের দেওভোগ এলাকার চুনকা কুটিরে আইভীর বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টার আলোচনার পর শুক্রবার (৯ মে) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় বাসার বাইরে তার সমর্থকদের উপস্থিতি ছিল।
আদালতে হাজিরা ও কারাগারে প্রেরণ:
শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাইনুদ্দিন কাদেরের আদালতে আইভীকে হাজির করা হলে শুনানি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়। মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ ২৬ মে নির্ধারণ করা হয়েছে ।
হত্যা মামলার:
২০২৪ সালের ২০ জুলাই সন্ধ্যায় আদমজী এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে পোশাকশ্রমিক মিনারুল ইসলাম নিহত হন। পরদিন তার ভাই নাজমুল হক বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন, যেখানে ১৩২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৩০০ জনকে আসামি করা হয় ।
গ্রেপ্তারের সময় হামলার ঘটনা:
আইভীকে গ্রেপ্তারের পর তাকে নিয়ে যাওয়ার সময় নারায়ণগঞ্জ শহরের বিবি রোডের কালীর বাজার মোড়ে পুলিশের গাড়িবহরে হামলা হয়। র্যাব ও পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে, এতে পুলিশের দুই সদস্যসহ পাঁচজন আহত হন ।
আইভীর প্রতিক্রিয়া:
গ্রেপ্তারের সময় আইভী বলেন, “আমি তো বাড়িতেই ছিলাম, আমি তো পালাইনি। তাহলে এইভাবে আমাকে গ্রেপ্তার করতে হলো কেন?”
তিনি আরও বলেন, “আমি কি জুলুমবাজ, আমি কি হত্যা করেছি, আমি কি চাঁদাবাজি করেছি, আমার এমন কোনো রেকর্ড আছে নারায়ণগঞ্জ শহরে কোনো বিরোধী দলকে আঘাত করেছি, তাহলে কিসের জন্য কী কারণে, কোন ষড়যন্ত্রের কারণে কার স্বার্থে আমাকে গ্রেপ্তার করা হলো? আমিও প্রশাসনের কাছে জানতে চাই” ।
উল্লেখযোগ্য তথ্য:
আইভীর বিরুদ্ধে হত্যা, বিস্ফোরকসহ মোট পাঁচটি মামলা রয়েছে।
মিনারুল ইসলাম হত্যা মামলায় আরও কয়েকজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব অভিযুক্ত, যার মধ্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান রয়েছেন ।
এই ঘটনা বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে।