জয়শঙ্করের বার্তা: সন্ত্রাসবাদের প্রতি শূন্য সহনশীলতা দেখাতে হবে

কাশ্মীর উত্তপ্ত: ‘অপারেশন সিঁন্দুর’ চালাল ভারত, পাল্টা হামলা পাকিস্তানের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কাশ্মীর আবারও রক্তাক্ত। পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে কথিত সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে ভারতের চালানো অভিযানের পর পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। ভারতের ‘অপারেশন সিঁন্দুর’ অভিযানে নয়টি লক্ষ্যবস্তুতে ‘নিখুঁত’ হামলার পর পাকিস্তান পাল্টা জবাব দিয়েছে ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলার মাধ্যমে। নিহত হয়েছে অন্তত আটজন, গুলি ও গোলার লড়াই অব্যাহত রয়েছে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর।

ভারতের অভিযান: ‘অপারেশন সিঁন্দুর’

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি অনুযায়ী, ‘অপারেশন সিঁন্দুর’ অভিযানে পাকিস্তান ও পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের লস্কর-ই-তৈয়বা, হিজবুল মুজাহিদিন এবং জইশ-ই-মোহাম্মদের মতো সংগঠনের নয়টি ঘাঁটিতে আঘাত হানা হয়েছে। এই অভিযান চালানো হয় পেহেলগামে সম্প্রতি হওয়া হামলার জবাব হিসেবে, যেখানে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর অভিযানের কয়েক ঘণ্টা পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন,
“বিশ্বকে সন্ত্রাসবাদের প্রতি শূন্য সহনশীলতা দেখাতে হবে।”
তিনি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য রাষ্ট্রগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন এবং ভারতের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন।

পাকিস্তানের পাল্টা প্রতিক্রিয়া

অন্যদিকে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী দাবি করেছে, ভারতের হামলায় কোটলি, মুজাফফরাবাদ, মুরিদকে, বাগ ও ভাওয়ালপুরে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (ISPR) মহাপরিচালক এই হামলাকে “কাপুরুষোচিত” আখ্যা দিয়ে জানান, পাকিস্তান ইতোমধ্যে এর উপযুক্ত জবাব দিতে শুরু করেছে।

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেন,
“সীমান্ত আগ্রাসনের জবাবে পাকিস্তান বিমান বাহিনী ভারতের কমপক্ষে পাঁচটি যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে।”

নিয়ন্ত্রণরেখায় উত্তেজনা

কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা (LoC) বরাবর রাতভর ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, পাকিস্তানি সেনাদের গুলিতে তিনজন ভারতীয় বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। পাল্টা জবাব হিসেবে ভারতও গুলি ও মর্টার হামলা চালিয়েছে।

এছাড়া ভারতের হামলায় দুটি মসজিদসহ মোট ৯টি স্থাপনায় ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, বুধবার ভোরে চালানো হামলায় অন্তত আটজন প্রাণ হারিয়েছেন এবং বহু মানুষ আহত হয়েছেন।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও উদ্বেগ

দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশীর এই নতুন সামরিক উত্তেজনায় আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো বেসামরিক প্রাণহানি ও ধর্মীয় স্থানে হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পরিস্থিতি দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিবেশের জন্য চরম ঝুঁকি তৈরি করছে, বিশেষ করে যখন উভয় পক্ষই পাল্টা প্রতিশোধে অনড়।