ছদ্মবেশে ফিশিং হামলার উল্কার মতো বৃদ্ধি, বাঁচার উপায় জানুন
টুইট ডেস্ক : প্রযুক্তিনির্ভরতা যত বাড়ছে, ততই বেড়ে চলেছে সাইবার ঝুঁকি। এর মধ্যে সবচেয়ে উদ্বেগজনক হলো— ফিশিং হামলা, যা ইমেইল বা ভুয়া ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার এক চতুর প্রতারণা।
সাইবার নিরাপত্তা গবেষণা প্রতিষ্ঠান চেক পয়েন্ট রিসার্চ জানায়, ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে বিশ্বজুড়ে ফিশিং আক্রমণের পরিমাণ আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। প্রতারকরা এখন সবচেয়ে বেশি ভরসা রাখছে তিনটি বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তি ব্র্যান্ড— মাইক্রোসফট, গুগল এবং অ্যাপল এর নামের ওপর।
প্রতারণার কৌশল-
ফিশিং ইমেইলগুলো সাধারণত এমনভাবে তৈরি করা হয় যেন তা দেখতে একেবারে আসল মনে হয়। এর মধ্যে থাকতে পারে-
১.পাসওয়ার্ড পরিবর্তনের অনুরোধ
২.অ্যাকাউন্ট বন্ধের হুমকি
৩.লোভনীয় অফার বা নিরাপত্তা আপডেটের নোটিস
এইসব ইমেইলের সঙ্গে দেওয়া হয় একটি ভুয়া লিংক, যেখানে ক্লিক করলে ব্যবহারকারী পৌঁছে যান দেখতে আসলমতো একটি ওয়েবসাইটে। সেখানে তারা নিজের লগইন তথ্য, পাসওয়ার্ড বা ব্যাংক ডিটেইলস দিয়ে বসেন— এবং প্রতারকের হাতে তুলে দেন মূল্যবান সব তথ্য।
এক উদাহরণে দেখা গেছে, মাস্টারকার্ডের নামে তৈরি করা একটি ভুয়া সাইট বিশেষভাবে জাপানি ব্যবহারকারীদের লক্ষ্য করে চালানো হয়, যেখানে তাদের থেকে চাওয়া হয় কার্ড নম্বর, মেয়াদ ও সিভিভি। এসব তথ্য সংগ্রহ করে প্রতারকচক্র অর্থ আত্মসাৎ করে।
বিশ্বাসই ফাঁদ-
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষের চোখ বন্ধ বিশ্বাসই এখন হ্যাকারদের সবচেয়ে বড় অস্ত্র। অধিকাংশ ব্যবহারকারী মাইক্রোসফট, গুগল বা অ্যাপলের মতো ব্র্যান্ডের সেবা গ্রহণ করেন। তাই এসব প্রতিষ্ঠানের নামে একটি মেইল এলেই সন্দেহ না করে অনেকেই ক্লিক করে ফেলেন।
কিভাবে বুঝবেন ফিশিং ইমেইল?
নিচের লক্ষণগুলো খেয়াল করুন:
১.প্রেরকের ঠিকানা অচেনা বা সন্দেহজনক
২.বার্তার ভাষায় তাড়াহুড়ো বা ভয় দেখানোর ইঙ্গিত
৩.অপ্রত্যাশিত লিংক বা অ্যাটাচমেন্ট
৪.বানান ভুল বা ভাঙা বাক্যগঠন
নিরাপদ থাকার কিছু সহজ উপায়
১.অপরিচিত ইমেইলে লিংকে ক্লিক করবেন না
২.প্রেরকের ঠিকানা যাচাই করুন
৩. ডাউনলোড বা লগইন করার আগে ওয়েব অ্যাড্রেস মিলিয়ে নিন
৪.মাল্টি-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন (MFA) চালু রাখুন
৫.নিয়মিত সাইবার সচেতনতা প্রশিক্ষণ নিন
প্রযুক্তি যেমন সুবিধা এনেছে, তেমনি বিপদও। তাই এখন প্রয়োজন সচেতনতা— কারণ ফিশিং এখন আর শুধু প্রযুক্তি পেশাজীবীদের নয়, বরং প্রতিটি সাধারণ ব্যবহারকারীর জন্যই এক ভয়ঙ্কর হুমকি।