সিন্ধু নদে বাঁধ দিলে সামরিক হামলার হুঁশিয়ারি পাকিস্তানের
টুইট ডেস্ক: ভারত যদি সিন্ধু নদের পানিপ্রবাহ বন্ধ করতে কোনো বাঁধ বা এ ধরনের স্থাপনা নির্মাণের চেষ্টা করে, তবে পাকিস্তান তা সামরিক হামলা হিসেবে বিবেচনা করবে এবং প্রতিক্রিয়া জানাবে-এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ।
শুক্রবার জিও নিউজের ‘নয়া পাকিস্তান’ নামের একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “শুধু গুলি বা গোলা ছুড়লেই আগ্রাসন হয় না। পানির প্রবাহ বন্ধ করাও এক ধরনের আগ্রাসন। এতে লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু হতে পারে ক্ষুধা ও তৃষ্ণায়।” তিনি আরও বলেন, “যদি ভারত সিন্ধু নদে বাঁধ নির্মাণ শুরু করে, তবে পাকিস্তান নিশ্চিতভাবেই তা ধ্বংস করবে।”
তবে তিনি জানান, আপাতত পাকিস্তান আন্তর্জাতিক ফোরামে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে এবং পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
কাশ্মিরে ভয়াবহ হামলা ও দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা
গত ২২ এপ্রিল, ভারতের জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগাঁও জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে পর্যটকদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায় কাশ্মিরভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার সহযোগী ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’। এই ঘটনায় ২৬ জন পুরুষ পর্যটক নিহত হন এবং বেশ কয়েকজন আহত হন। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর এটি কাশ্মিরে সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা।
এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত একাধিক শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করে, যার মধ্যে রয়েছে সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত, পাকিস্তানি কূটনীতিকদের প্রত্যাহার, এবং পাকিস্তানিদের ভিসা বাতিল।
পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে পাকিস্তানও ভারতের জন্য স্থল ও আকাশপথ বন্ধ করে দেয়, ভারতীয় নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।
যুদ্ধের আশঙ্কা
ঘটনার পর দক্ষিণ এশিয়ার দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে চলমান উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। গত সপ্তাহে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শীর্ষ সামরিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেখানে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপের আলোচনাও হয় বলে সূত্র জানায়।
যদিও এখনও কোনো সরাসরি সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনে করেন— দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধের আশঙ্কা এখনো পুরোপুরি কেটে যায়নি।
“যুদ্ধের হুমকি এড়ানো গেছে- এমনটা এখনও বলা যায় না,” বলেন খাজা আসিফ।