প্রবাসীর টাকা আত্মসাৎ: সাউথ বাংলা ব্যাংকের নারী কর্মকর্তা গ্রেফতার
টুইট ডেস্ক: খুলনায় সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের এক নারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রবাসীর একাউন্ট থেকে ৭ লাখ টাকা জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাতের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় অভিযুক্ত আফসানা শাহিন মুন্নি (৩৬)–কে ঢাকার মুগদা এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে খুলনা থানা পুলিশ।
আফসানা শাহিন মুন্নি ব্যাংকের খুলনা শাখায় সিনিয়র অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন এবং খুলনা মহানগরীর ইস্পাহানি আবাসিক এলাকার বাসিন্দা। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোল্লা জুয়েল রানার নেতৃত্বে পুলিশ তাকে বুধবার দিবাগত রাতে গ্রেফতার করে। বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ জানায়, তার বিরুদ্ধে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।
মালয়েশিয়া প্রবাসী আল হাদিস বাট্রি ২০২৩ সালের ১৩ নভেম্বর খুলনার আপার যশোর রোডের সাউথ বাংলা ব্যাংকে অনলাইনের মাধ্যমে একটি একাউন্ট খোলেন। একাউন্টটিতে বিভিন্ন সময়ে মোট ১০ লাখ ২ হাজার টাকা জমা হয়। চলতি বছরের ১৮ মার্চ দেশে ফিরে তিনি ব্যাংকে টাকা তুলতে গেলে জানতে পারেন, একাউন্টে মাত্র ৩ লাখ ২ হাজার টাকা অবশিষ্ট রয়েছে।
ব্যাংক স্টেটমেন্ট পরীক্ষা করে দেখা যায়, ২০২৪ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি আরটিজিএস (RTGS) পদ্ধতিতে তার একাউন্ট থেকে অপর একজন আসামির ব্র্যাক ব্যাংক একাউন্টে ৭ লাখ টাকা স্থানান্তর করা হয়েছে। অথচ এই প্রক্রিয়ায় হিসাবধারীর উপস্থিতি বাধ্যতামূলক, অথচ তিনি তখন বিদেশে অবস্থান করছিলেন।
এই অভিযোগে আল হাদিসের স্ত্রী আফসানা ইয়াসমিন তৃষ্ণা খুলনা সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন, যেখানে মুন্নিসহ ৮-৯ জনকে আসামি করা হয়। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ভুয়া লোক সাজিয়ে এবং কাগজপত্র জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে।
মামলার বাদী জানান, আফসানা শাহিন মুন্নি পূর্বেও একাধিক গ্রাহকের অর্থ জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন। এমনকি বাদীর নিজের একাউন্ট থেকেও আরও ৭ লাখ টাকা এবং অন্য একজন গ্রাহকের ৬ লাখ টাকা আত্মসাতের চেষ্টা করেন মুন্নি ও তার সহযোগীরা। যদিও তাৎক্ষণিক উপস্থিতিতে সেই চেষ্টাটি ব্যর্থ হয়।
এই ধরনের প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডের জন্য সম্প্রতি মুন্নিকে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ চাকরিচ্যুত করে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যাংকের খুলনা শাখার নতুন ম্যানেজার হাফিজ আহমেদ জানান, তিনি সদ্য যোগদান করেছেন এবং বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন।
সাবধানতার সঙ্গে তদন্ত এগিয়ে চলেছে এবং ভুক্তভোগী প্রবাসী পরিবার ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করছেন। ব্যাংকিং ব্যবস্থায় এমন জালিয়াতির ঘটনা পুনরায় গ্রাহকদের আস্থা হরণের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।