কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: মধ্যস্থতায় যুক্তরাষ্ট্র

টুইট ডেস্ক: ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কাশ্মীর ঘিরে ফের বাড়তে থাকা সাম্প্রতিক উত্তেজনা বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন উদ্বেগ তৈরি করেছে। দুই প্রতিবেশী পরমাণু শক্তিধর দেশের এই স্নায়ুযুদ্ধ পরিস্থিতি প্রশমনে কূটনৈতিক হস্তক্ষেপ শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠকে বসবেন বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস জানিয়েছেন, “আমরা উভয় দেশের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করছি। আমাদের অবস্থান স্পষ্ট—অবস্থা যেন কেউ আরও ঘোলাটে না করে। আলোচনার মাধ্যমেই উত্তেজনা কমাতে হবে।” তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান কূটনৈতিক অগ্রাধিকার হলো দুই দেশের মধ্যে সরাসরি সংলাপ নিশ্চিত করা এবং দক্ষিণ এশিয়ার এই আঞ্চলিক উত্তেজনা প্রশমন করা।
ভারত-পাকিস্তান পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

ভারত, সাম্প্রতিক এক বিবৃতিতে, কাশ্মীরে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে। তবে এই অভিযোগের পক্ষে তারা এখনও কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেনি। অপরদিকে পাকিস্তান এই অভিযোগ দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করে বলেছে, ভারত ইচ্ছাকৃতভাবে আঞ্চলিক উত্তেজনা বাড়াতে চায়। ইসলামাবাদ আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানিয়েছে।

যদিও মার্কিন প্রশাসন ভারতের অভিযোগ নিয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করেনি, তবে পরিস্থিতি ‘ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে’ বলে জানিয়েছে।
দাঈশ বিরোধী অভিযানে পাকিস্তানের ভূমিকায় কৃতজ্ঞতা

সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী দাঈশ (আইএস)-সংশ্লিষ্ট এক সন্দেহভাজন জঙ্গিকে গ্রেফতার করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ অভিযানে সহযোগিতার জন্য পাকিস্তানকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে। মুখপাত্র ব্রুস বলেন, “ঘটনাটি যখন ঘটে, আমরা তা গভীরভাবে প্রশংসা করেছি।”
অভ্যন্তরীণ রাজনীতির প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নীরবতা

পাকিস্তানের রাজনৈতিক অঙ্গনে সাম্প্রতিক উত্তাল পরিস্থিতি নিয়েও মার্কিন কংগ্রেসে উদ্বেগ প্রকাশিত হয়েছে। তবে এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি ব্রুস। তার ভাষ্য, “আমরা বর্তমানে কেবল আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি।”

দক্ষিণ এশিয়ায় কাশ্মীর দীর্ঘদিন ধরেই ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দু। যুদ্ধ নয়, শান্তিপূর্ণ সংলাপের মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধানে আন্তর্জাতিক মহলের একাট্টা কূটনৈতিক চেষ্টার সময় এখন। এমন এক মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগ, বিশেষত দুই দেশের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বিশ্ব শান্তির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।