সিন্ধুর পানি বন্ধের হুমকি ‘যুদ্ধের উসকানি’: পাকিস্তান
টুইট নিউজ: কাশ্মীরে প্রাণঘাতী হামলার জেরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার সম্পর্ক চরম উত্তেজনায় পৌঁছেছে। ভারতশাসিত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে এক সশস্ত্র হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হওয়ার ঘটনার দায় পাকিস্তানের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে দিল্লি।
এর জেরে ভারত একাধিক কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে, যার পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইসলামাবাদও দিয়েছে হুঁশিয়ারি- পানি বন্ধের চেষ্টা হলে তা হবে ‘যুদ্ধের উসকানি’।
ভারতের কড়া সিদ্ধান্ত
হামলার পর ভারত সরকার পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করে। সেগুলো হলো-
সিন্ধু নদীর পানিবণ্টন চুক্তি বাতিল
আটারি সীমান্ত বন্ধ
পাকিস্তানে নিযুক্ত ভারতীয় কূটনীতিকদের প্রত্যাহার
পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল
পাকিস্তানিদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ত্যাগের নির্দেশ
পাকিস্তানের পাল্টা অবস্থান
এর পরদিন, বৃহস্পতিবার পাকিস্তান সরকারও একাধিক কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক পদক্ষেপ ঘোষণা করে-
ভারতের পানিপ্রবাহ বন্ধ বা অন্যদিকে প্রবাহিত করার যেকোনো উদ্যোগকে ‘যুদ্ধের উসকানি’ হিসেবে দেখবে ইসলামাবাদ
সব ধরনের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য স্থগিত
ভারতকে তৃতীয় দেশের সঙ্গে বাণিজ্যের জন্য নিজ ভূখণ্ড ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা
বিনা ভিসা প্রকল্প বাতিল, ভারতীয়দের জন্য ভিসা স্থগিত
পাকিস্তানে ভারতীয় কূটনীতিকের সংখ্যা ৩০ জনে সীমিত
ভারতীয় প্রতিরক্ষা উপদেষ্টাদের ৩০ এপ্রিলের মধ্যে পাকিস্তান ত্যাগের নির্দেশ
আকাশসীমা ও সীমান্ত বন্ধ
পাকিস্তান ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলোর জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে। পাশাপাশি ওয়াগাহ সীমান্ত তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সব ধরনের বাণিজ্যিক লেনদেনও স্থগিত রয়েছে।
সিমলা চুক্তিও স্থগিত
পাকিস্তান ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তি সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে। এই চুক্তির মাধ্যমেই কাশ্মীর সীমান্তে নিয়ন্ত্রণরেখা নির্ধারণ করা হয়েছিল এবং এটি দুই দেশের মধ্যে শান্তিপূর্ণ আলোচনার ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত।
প্রধানমন্ত্রী দফতরের বিবৃতি
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের কার্যালয় থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভারত যদি পানির প্রবাহ বন্ধের মতো পদক্ষেপ নেয়, তাহলে পাকিস্তান ‘জাতীয় শক্তির পূর্ণ ব্যবহার করে’ জবাব দেবে। সিন্ধু পানিচুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্তকে ইসলামাবাদ সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।
আন্তর্জাতিক উদ্বেগ
দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের এই পাল্টাপাল্টি সিদ্ধান্তে দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। আন্তর্জাতিক মহল উদ্বেগ প্রকাশ করছে- ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে এই স্নায়ুযুদ্ধ পরিস্থিতি আরও গভীর হতে পারে।