ভারত ভ্রমণে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি

কাশ্মির, মণিপুর ও সীমান্তবর্তী অঞ্চল এড়িয়ে চলার পরামর্শ

নিজস্ব প্রতিবেদক: পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর ভারতের বেশ কয়েকটি অঞ্চল ভ্রমণে কঠোর সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত ২৩ এপ্রিল (বুধবার) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে ভারত ভ্রমণসংক্রান্ত এই নতুন নির্দেশনাটি প্রকাশ করে।

এর সূত্র ধরে ভারতের জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম NDTV, Times of India, Hindustan Times সহ একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম রিপোর্ট প্রকাশ করেছে।

চারটি অঞ্চলে সর্বোচ্চ সতর্কতা (Level 4)

নির্দেশনায় জম্মু ও কাশ্মির, ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত, মণিপুর এবং ভারতের মধ্য ও পূর্বাঞ্চলের কিছু এলাকায় চতুর্থ মাত্রার সতর্কতা (Level 4) জারি করা হয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রমণ নির্দেশনার সর্বোচ্চ মাত্রা এবং এর মানে হলো—সেসব অঞ্চলে ভ্রমণ না করা।

জম্মু ও কাশ্মির

সন্ত্রাসী হামলা ও সহিংস বেসামরিক অস্থিরতার ঝুঁকির কারণে পুরো কাশ্মির অঞ্চল এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে লাদাখ ও লেহ শহর সফরে নিষেধাজ্ঞা নেই।

ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত

দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার কারণে সীমান্ত থেকে ১০ কিলোমিটারের মধ্যে ভ্রমণ এড়িয়ে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এই অঞ্চলে “অভ্যন্তরীণ সংঘাত বা সীমান্ত যুদ্ধ” সংঘটিত হতে পারে।

মণিপুর

সম্প্রতি জাতিগত সহিংসতা ও সশস্ত্র সংঘর্ষে বহু প্রাণহানি হওয়ায় মণিপুরকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে ভ্রমণ পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

মাওবাদী (নকশাল) অধ্যুষিত অঞ্চল

বিহার, ঝাড়খণ্ড, ছত্তিশগড়, পশ্চিমবঙ্গ, উড়িষ্যা, মহারাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চল ও মধ্যপ্রদেশের পূর্বাংশসহ বিস্তীর্ণ এলাকাকে নকশালপন্থি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

পেহেলগাম হামলার প্রেক্ষাপট

২৩ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে একটি পর্যটকবাহী বাসে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন এবং বহু আহত হন। অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এই হামলার পরই যুক্তরাষ্ট্র নতুন সতর্কতা জারি করে। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে এবং পাকিস্তানি নাগরিকদের ২৯ এপ্রিলের মধ্যে দেশ ছাড়ার নির্দেশও জারি করেছে।

বাংলাদেশিদের জন্য পরামর্শ 

বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশি নাগরিকদের ভারত ভ্রমণ পরিকল্পনায় সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। বিশেষ করে যেসব বাংলাদেশি পর্যটন, চিকিৎসা কিংবা ব্যবসার জন্য ভারত সফর করে থাকেন, তাদের নিম্নোক্ত দিকগুলো বিবেচনায় নেওয়া জরুরি-

১. কাশ্মির, মণিপুর এবং সীমান্তবর্তী এলাকা সম্পূর্ণ এড়িয়ে চলা উচিত।

২. যাত্রার আগে ভারতীয় হাইকমিশনের মাধ্যমে সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া উচিত।

৩. যেসব বাংলাদেশি ইতোমধ্যে ভারতে অবস্থান করছেন, তারা স্থানীয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পরামর্শ মেনে চলুন এবং ভিসার মেয়াদসহ অন্যান্য কাগজপত্র সঙ্গে রাখুন।

৪. পর্যটনের উদ্দেশ্যে ভ্রমণ স্থগিত রাখা নিরাপদ সিদ্ধান্ত হতে পারে এই মুহূর্তে।

৫. বিশেষ প্রয়োজনে চিকিৎসা ও ব্যবসার কারণে ভ্রমণ করলে শুধুমাত্র বড় শহর যেমন দিল্লি, কলকাতা বা মুম্বাই সীমাবদ্ধ থাকা উত্তম।