পাকিস্তানিদের ২৯ এপ্রিলের মধ্যে দেশ ছাড়ার নির্দেশ

বিশ্ব ডেস্ক: কাশ্মিরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত সরকার একটি কঠোর কূটনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

২৪ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) নয়াদিল্লির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বর্তমানে ভারতে অবস্থানরত সব পাকিস্তানি নাগরিককে ২০২৫ সালের ২৯ এপ্রিলের মধ্যে দেশ ত্যাগ করতে হবে।

ভয়াবহ হামলা ও প্রাণহানি

ঘটনার সূত্রপাত ঘটে ২২ এপ্রিল কাশ্মিরের পেহেলগামে এক পর্যটকবাহী বাসে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার মাধ্যমে। বাসটি জম্মু ও কাশ্মিরের এক জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্যে যাচ্ছিল। হঠাৎ করে অতর্কিত হামলায় প্রাণ হারান ২৬ জন নিরীহ পর্যটক, আহত হন আরও অনেকে। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে।

ঘটনার পরপরই ভারত পাকিস্তানকে দায়ী করে জানায়, হামলায় জড়িতদের সঙ্গে ইসলামাবাদের প্রত্যক্ষ সম্পর্ক রয়েছে।

ভারতের কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়া

এই হামলার পরপরই নয়াদিল্লি কড়া সুরে পাকিস্তান সরকারের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে এবং কূটনৈতিক স্তরে বিভিন্ন প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ শুরু করে। প্রথম ধাপে পাকিস্তানের ভারতে নিযুক্ত কূটনৈতিক প্রতিনিধিদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দেওয়া হয়। এই সিদ্ধান্তের একদিন পরই পাকিস্তানি নাগরিকদের দেশ ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হলো।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঘোষণা

বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়

“পেহেলগাম জঙ্গি হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত সরকার তাৎক্ষণিকভাবে পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা পরিষেবা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেইসঙ্গে বর্তমানে ভারতে অবস্থানরত সমস্ত পাকিস্তানি নাগরিককে তাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ভারত ত্যাগ করতে হবে।”

ভিসা বন্ধ, বাড়ছে সীমান্ত উত্তেজনা

ভারতীয় কর্মকর্তারা জানান, নতুন করে আর কোনো পাকিস্তানি নাগরিককে ভিসা দেওয়া হবে না। ভিসা বাতিলের পাশাপাশি সীমান্তে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে এবং গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া

এখনও পর্যন্ত পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি। তবে ইসলামাবাদের কিছু অভ্যন্তরীণ সূত্র বলছে, তারা এই সিদ্ধান্তকে “একতরফা ও অযৌক্তিক” হিসেবে অভিহিত করেছে এবং খুব শিগগিরই একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিতে পারে।

মানবিক দৃষ্টিকোণ ও ভবিষ্যৎ পরিণতি

বিশ্লেষকদের মতে, এ ধরনের সিদ্ধান্ত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে দীর্ঘস্থায়ী নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। ভারতে অবস্থানরত অনেক পাকিস্তানি নাগরিক দীর্ঘদিন ধরে পড়াশোনা, চিকিৎসা বা ব্যবসার উদ্দেশ্যে অবস্থান করছেন। তাদের হঠাৎ করে দেশত্যাগের নির্দেশ অনেকের জন্য মানবিক সংকট তৈরি করতে পারে।