কাশ্মিরে ভয়াবহ হামলার পর উত্তেজনা: কী পদক্ষেপ নিতে পারে ভারত?

টুইট ডেস্ক: কাশ্মিরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর সাম্প্রতিক রক্তাক্ত হামলা- যাতে নিহত হয়েছেন অন্তত ২৬ জন-২০১৯ সালের পর এই অঞ্চলে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। নিহতরা সেনা বা সরকারি কর্মচারী নন, বরং ছুটি কাটাতে আসা সাধারণ মানুষ। এ কারণেই হামলাটি কেবল নৃশংসই নয়, বরং ভারতের কাশ্মিরে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফেরানোর প্রচেষ্টার মাঝেই এক প্রতীকী চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

হামলার পরদিনই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক কূটনৈতিক ও প্রশাসনিক পদক্ষেপ ঘোষণা করেছে ভারত। এর মধ্যে রয়েছে সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ, পানি চুক্তি স্থগিত, পাকিস্তানি কূটনীতিক বহিষ্কার এবং কিছু নাগরিকের ভিসা বাতিল।

ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, “হামলার জবাব কেবল হামলাকারীদের নয়, তাদের পেছনের শক্তিগুলোকেও দেওয়া হবে।” বিশ্লেষকদের মতে, এখন প্রশ্নটি ‘জবাব আসবে কি না’ নয়, বরং ‘কখন এবং কীভাবে’।

অতীতের প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যতের সম্ভাবনা

২০১৬ সালে উরি হামলার পর ভারত সার্জিকাল স্ট্রাইক চালায়। আবার ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার জবাবে পাকিস্তানের বালাকোটে বিমান হামলা করে ভারত। দুই ক্ষেত্রেই জবাব ছিল সীমান্ত পার হয়ে। সেই ধারা অনুসরণ করেই এবারও ভারতের প্রতিক্রিয়া আসতে পারে।

সামরিক বিশ্লেষক শ্রীনাথ রাঘবনের মতে, সীমান্ত পেরিয়ে সীমিত লক্ষ্যভিত্তিক হামলা হতে পারে ভারতের সম্ভাব্য পদক্ষেপ। তবে এতে ভুল হিসাবের ঝুঁকি থেকেই যায়।

পররাষ্ট্র বিশ্লেষক মাইকেল কুগেলম্যান মনে করেন, সাধারণ নাগরিকদের হতাহত হওয়ার কারণে ভারতের সামরিক প্রতিক্রিয়া এবার আরও জোরালো হতে পারে, বিশেষত যদি পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া যায়।

সম্ভাব্য পথ ও রাজনৈতিক চাপ

বিশ্লেষক ক্রিস্টোফার ক্ল্যারি বলছেন, ভারতের সামনে দুটি পথ হয় সীমান্তে গুলি বিনিময় পুনরায় শুরু করা, নয়তো ২০১৯ সালের মতো বিমান বা মিসাইল হামলা চালানো। তবে প্রতিটি পদক্ষেপে পাল্টা জবাবের আশঙ্কা থেকেই যায়।

পারমাণবিক বাস্তবতায়, উভয় দেশই সচেতনভাবে সীমিত প্রতিক্রিয়ার পথে থাকতে চাইবে। ঠিক যেমনটা ২০১৯ সালে হয়েছিল।

পাকিস্তান কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে?

পাকিস্তান হয়তো কূটনৈতিক প্রতিবাদ জানাবে, আবার সীমিত সামরিক প্রতিক্রিয়াও জানাতে পারে। তাদের অভিযোগ থাকবে- প্রমাণ ছাড়াই দায় চাপানো হয়েছে। সাবেক রাষ্ট্রদূত হুসেইন হাক্কানির মতে, ভারতের সীমিত ‘সার্জিকাল স্ট্রাইক’ এবারও একটি সম্ভাব্য কৌশল হতে পারে।
অভ্যন্তরীণ ব্যর্থতার দিকেও নজর দরকার

কাশ্মির এখন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হওয়ায় আইন-শৃঙ্খলার দায়িত্ব সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে। পর্যটন মৌসুমে এ ধরনের বড় হামলা নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতার দিকেই ইঙ্গিত দেয়।