বাগমারায় গ্রাম আদালতের এজলাসে নির্বাচনী প্রস্তুতি সভা

বাগমারায় গ্রাম আদালতের এজলাসে নির্বাচনী প্রস্তুতি সভা । বক্তব্য রাখছেন ১৩ নং গোয়ালকন্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর সরকার।

নিজস্ব প্রতিবেদক : ছোটখাটো ফৌজদারি ও দেওয়ানি বিরোধ স্থানীয়ভাবে মীমাংসার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের গ্রাম আদালতের এজলাস তৈরি করেছে সরকার। দেশের প্রতিটি ইউনিয়নের এখতিয়ারধীন এলাকায় কতিপয় বিরোধ ও বিবাদ সহজ ও দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে গ্রাম আদালত গঠিত হয়। ৫ (পাচ) জন প্রতিনিধির সমন্বয়ে গ্রাম আদালত গঠিত হয় । মূলত: সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আদালতের প্রানকেন্দ্র ও মুখ্য বিচারকের দ্বায়িত্ব পালন করেন।

তারই ধারাবাহিকতায় রাজশাহী জেলার বাগমারার ১৩ নং গোয়ালকন্দি ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে গ্রাম আদালতের এজলাস তৈরি করেছে সরকার। সেখানকার কিছু ছবি সম্প্রতি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, ইউনিয়ন পরিষদের ভিতরে গ্রাম আদালতের এজলাসে নারী পুরুষের উপস্থিতি। কেউ বসে আছেন আবার কেউ দাড়িয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন।

সেখানে দাড়িয়ে বক্তব্য রাখছেন ১৩ নং গোয়ালকন্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর সরকার ও গোয়ালকান্দি ইউপি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বকুল খরাদী মাস্টার। এছাড়াও সেখানে একজন মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রীকে বক্তব্য দিতে দেখা যায়। সেখানে উপস্থিত থেকে সভাপতি করেন গোয়ালকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম।

গত বুধবার (০৪ ডিসেম্বর) একটি ফেসবুক পোষ্টে লিখা হয়েছে, “আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে গোয়ালকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ এর মতবিনিময় সভা”। ওয়ার্ড পর্যায়ের একজন আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, গ্রাম আদালতের এজলাসে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের মতবিনিময় সভা করেছেন তারা।

এদিকে, থানা আওয়ামী লীগের একজন জানায়, সেখানে রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের নির্বাচনী প্রস্তুতি সভা করা হয়েছে সেখানে।

গ্রাম আদালতের এজলাসে দলীয় কোন মিটিং করতে পারে কি-না বা একজন চেয়ারম্যান আইন ভঙ্গ করেছে কি-না সেই বিষয়ে একজন বিচারক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদে এরকম গ্রাম আদালত আছে। সেটি একটি আদালত। সেখানে এই প্রোগ্রাম করা ঠিক হয়নি।

উল্লেখ্য, স্থানীয়ভাবে পল্লী অঞ্চলের সাধারণ মানুষের বিচার প্রাপ্তির কথা বিবেচনায় নিয়ে স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশ ১৯৭৬ সালে প্রণীত হয় গ্রাম আদালত অধ্যাদেশ। পরবর্তীতে ২০০৬ সালের ০৯ মে ১৯ নং আইনের মাধ্যমে প্রণীত হয় গ্রাম আদালত আইন ।

এ আইনের মূল কথাই হলো স্হানীয়ভাবে স্বল্প সময়ে বিরোধ নিষ্পিত্তি।নিজেদেন মনোনীত প্রতিনিধিদের সহায়তায় গ্রাম আদালত গঠন করে বিরোধ শান্তি পূর্ণ সমাধানের মাধ্যমে সামাজিক শান্তি ও স্হিতিশীলতা বজায় থাকে বলেই এ আদালতের মাধ্যমে আপামর জনগণ উপকৃত হচ্ছেন । গত ০৯ মে ২০০৬ সাল হতে গ্রাম আদালত আইন কার্যকর হয়েছে । ১৮৬০ সালের ৪৫ নং আইন, মূলত এ আইনেই অধিকাংশ অপরাধের বিচার হয়।