সংঘর্ষে ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা: পূর্বশত্রুতির জেরেই উত্তেজনা

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীতে আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ঢাকা কলেজ ও ঢাকা সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পারস্পরিক বিরোধ।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে ধানমন্ডি এলাকায় এই দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, যেখানে ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ির মতো সহিংসতাও দেখা যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, উত্তেজনার শুরু হয় হঠাৎ করেই, তবে বেশ কিছুদিন ধরেই দু’পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছিল। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
পূর্বশত্রুতির জের

ঢাকা কলেজের একাধিক শিক্ষার্থী দাবি করেন, সোমবার (২১ এপ্রিল) ধানমন্ডির একটি জায়গায় তাদের এক সহপাঠীকে মারধর করা হয়। সেই হামলায় জড়িতদের মধ্যে একজন সিটি কলেজের শিক্ষার্থী ছিল বলে তারা অভিযোগ করেন।

“গতকাল আমাদের এক বন্ধুকে পরিকল্পিতভাবে মারধর করা হয়েছে। সেই ঘটনার বিচার চাইতেই আজ আমরা এখানে এসেছি,” — বলেন এক শিক্ষার্থী।

তাদের মতে, পূর্ব থেকেই দুই কলেজের কিছু শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। পূর্বের ছোটখাটো কথা-কাটাকাটি বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিবাদের জের ধরেই বড় আকারে এই সংঘর্ষের রূপ নেয়।
পুলিশের হস্তক্ষেপ

সংঘর্ষের খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ধানমন্ডি থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশের একাধিক টিম। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লাঠিচার্জ করে এবং এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, “উভয়পক্ষকে নিয়ন্ত্রণে এনে বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়েছে। যেকোনো ধরনের উত্তেজনা রোধে এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।”

আহতদের চিকিৎসা

সংঘর্ষে আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে অন্তত ৩ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও ২ জনকে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে তাদের মধ্যে কেউ আশঙ্কাজনক নয় বলে চিকিৎসা সূত্রে জানা গেছে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিক্রিয়া

দুই কলেজের প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি না এলেও অভ্যন্তরীণভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জরুরি বৈঠক চলছে বলে জানা গেছে। শিক্ষার্থীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সামাজিক প্রতিক্রিয়া

ঘটনার ভিডিও এবং ছবি ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকে এ ধরনের ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, “প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীরা এভাবে সংঘাতে জড়ালে সেটি শুধু তাদের জন্য নয়, সমাজের জন্যও হুমকিস্বরূপ।”

এ ধরনের বারবার সংঘর্ষের ঘটনা রাজধানীর শিক্ষা পরিবেশকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে। অভিভাবক ও সচেতন নাগরিকরা বলছেন, এসব উত্তেজনার পেছনে কোনো তৃতীয় পক্ষ ইন্ধন দিচ্ছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা জরুরি। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।