নিশ্ছিদ্র বাণিজ্য নিরাপত্তায় চীনের কড়া বার্তা: স্বার্থবিরোধী চুক্তি মানবে না বেইজিং
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিশ্বের দুই প্রধান অর্থনীতির মধ্যে উত্তপ্ত বাণিজ্য সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে চীন এক কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে—যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের স্বার্থবিরোধী কোনো বাণিজ্য চুক্তিতে না যেতে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোকে।
এই বার্তা দিয়েছে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
সোমবার (২১ এপ্রিল) আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়, চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন, “চীন এমন কোনো চুক্তিকে সমর্থন করে না যা আমাদের সার্বভৌম স্বার্থকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। প্রয়োজনে আমরা কঠোর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত।”
এই হুঁশিয়ারির পেছনে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের চীনের ওপর অর্থনৈতিক চাপ বৃদ্ধির কৌশল, যা ট্রাম্প প্রশাসনের সময় থেকেই চলে আসছে। ব্লুমবার্গ-এর সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য সীমিত করার জন্য চাপ দিচ্ছে, যাতে তারা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে শুল্ক ছাড় পেতে পারে।
চীন অভিযোগ করছে, যুক্তরাষ্ট্র ‘সমতার’ কথা বলে একতরফাভাবে বাণিজ্য অংশীদারদের উপর শুল্ক আরোপ করছে এবং ‘পারস্পরিক শুল্ক’ আলোচনার নামে বৈশ্বিক বাণিজ্যে চাপ সৃষ্টি করছে। এতে করে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ভারসাম্য হুমকির মুখে পড়ছে।
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় স্পষ্ট করে জানিয়েছে, “আমরা আমাদের দেশের অর্থনৈতিক স্বার্থ ও অধিকার রক্ষায় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করব এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোসহ বৈশ্বিক অংশীদারদের সঙ্গে পারস্পরিক সংহতির ভিত্তিতে বাণিজ্য সম্প্রসারণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকব।”
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ৫০টি দেশের সঙ্গে শুল্ক ছাড় সংক্রান্ত আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে জাপান ও ইন্দোনেশিয়া যুক্তরাষ্ট্র থেকে খাদ্য ও অন্যান্য ভোগ্যপণ্য আমদানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা করছে বলে জানা গেছে।
এরই মাঝে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার তিনটি দেশ সফর করেন। সফরকালে তিনি বলেন— “বাণিজ্যযুদ্ধ কিংবা শুল্কযুদ্ধে কেউ জয়ী হয় না। একতরফা বাণিজ্যিক দমননীতি বিশ্ব অর্থনীতির স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকি।”
তিনি আরও আহ্বান জানান—আঞ্চলিক সহযোগিতা ও পারস্পরিক ন্যায্যতাভিত্তিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, চীনের এই কঠোর অবস্থান বৈশ্বিক বাণিজ্যে নতুন সমীকরণ তৈরি করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার উত্তেজনা শুধু এশিয়া নয়, ইউরোপ-আমেরিকান বাজারেও প্রভাব ফেলতে পারে।