পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা, মজুদের অভিযোগে চড়া দাম

টুইট ডেস্ক : পহেলা বৈশাখের পর হঠাৎ করেই রাজধানীসহ সারা দেশের পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। রমজান মাসজুড়ে স্থিতিশীল থাকা এই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে কেজিপ্রতি বেড়েছে ১৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। পেঁয়াজের ভরা মৌসুমেও এমন দাম বৃদ্ধিতে অবাক এবং ক্ষুব্ধ সাধারণ ক্রেতারা। ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মজুদের অভিযোগ উঠলেও আড়তদার ও খুচরা বিক্রেতারা একে-অপরকে দায় দিচ্ছেন।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারের এক বিক্রেতা বলেন, “দেশি হালি পেঁয়াজ ৫৫-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এখন। হঠাৎ করেই দাম বেড়ে গেছে। আমরা নিজেরাও জানি না, কেন এমন হলো।” অন্যদিকে আরেক বিক্রেতা জানান, পাইকারি বাজার থেকেই দাম বেশি হওয়ায় তাদের কিছু করার নেই।

তবে আড়তদাররা বলছেন, কৃষকরা এবার ‘মুড়িকাটা’ পেঁয়াজে প্রত্যাশিত দাম না পাওয়ায় অনেকেই বাজারে না ছেড়ে পেঁয়াজ মজুত করে রাখছেন। এতে সরবরাহ কমে গিয়ে একপ্রকার কৃত্রিম সংকট তৈরি হয়েছে, যার প্রভাব পড়ছে আড়ত, পাইকারি ও খুচরা-সব পর্যায়েই। এক আড়তদার জানান, “কৃষকরা লোকসানের আশঙ্কায় পেঁয়াজ ধরে রেখেছেন, সেই সুযোগে বাজারে সরবরাহ কমে যাচ্ছে।”

এ অবস্থায় বাজারে আবারও ‘সিন্ডিকেট’ সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন ক্রেতারা। তারা বলছেন, এখনই যদি বাজার মনিটরিং না বাড়ানো হয়, তাহলে কোরবানির ঈদের আগে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।

ভোক্তাদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংস্থা ক্যাবের সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, “পেঁয়াজের এই হঠাৎ দাম বাড়া ব্যবসায়ীদের নেতিবাচক চর্চা ও মধ্যসত্ত্বভোগীদের কারসাজির ফল। কৃষক দাম না পেলেও দাদন ব্যবসায়ী ও কমিশন এজেন্টরা মজুত করে বাজারে সংকট তৈরি করছে।”

তিনি আরও জানান, “সরকারি পর্যায়ে তদারকি প্রায় নেই বললেই চলে। ভোক্তা অধিদফতর বা জেলা প্রশাসন বাজারে সক্রিয় না হলে এই অবস্থা চলতেই থাকবে।”

পেঁয়াজের এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি রোধে জরুরি ভিত্তিতে সরকারি নজরদারি এবং বাজারে সরবরাহ নিশ্চিতের দাবি জানাচ্ছেন সাধারণ মানুষ ও বাজার বিশ্লেষকরা।