আলো ফেরালেন ব্রিটিশ চিকিৎসকরা: দৃষ্টি পেলেন গুলিবিদ্ধ তরুণরা

টুইট ডেস্ক: এক বছর আগেও তারা স্লোগান দিচ্ছিল— “গণতন্ত্র চাই, অধিকার চাই!”

শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে রাজপথে নেমে এসেছিল সহস্র তরুণ। তারপর এলো গুলির শব্দ। ছুটে গেল স্বপ্ন, নিভে গেল দৃষ্টির আলো।

দীর্ঘ অপেক্ষা শেষে, সেই জুলাই যোদ্ধাদের চোখে আলো ফেরালেন ব্রিটিশ চিকিৎসকরা। ঢাকায় এসে মাত্র দুই দিনে ২৪ জন আহতের চোখে সফল অস্ত্রোপচার করে দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দেন যুক্তরাজ্যের শীর্ষ চক্ষু বিশেষজ্ঞরা।

মানবিক উদ্যোগে ব্রিটিশ চিকিৎসক দল

মুরফিল্ডস আই হসপিটাল, লন্ডনের ডাঃ মাহি মুকিত ও ডাঃ নিয়াজ ইসলাম-এর নেতৃত্বে গঠিত বিশেষজ্ঞ দল ১৫০ জনের চোখের অবস্থা মূল্যায়ন করেন। তাদের বেশিরভাগই গত বছর ছাত্র-জনতার গুলিবিদ্ধ আন্দোলনের সময় আহত হন।

ডাঃ মাহি মুকিত বলেন, “যারা এক মাস ধরে কিছুই দেখতে পায়নি, তাদের চোখে আলো ফিরিয়ে দিতে পারা আমাদের জন্য সম্মানের।”

গল্পগুলো হৃদয়বিদারক

রোহান, যিনি দুই চোখে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন, এক চোখ বাঁচানো যায়নি। তবে অন্য চোখে রেটিনা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে দৃষ্টি ফিরতে শুরু করেছে।

২০ বছরের মিনহাজ—তার চোখে ঢুকে পড়েছিল গুলি, এখন অস্ত্রোপচারের পর সে আবার আলো দেখতে শুরু করেছে।

তবে সবাই এতটা সৌভাগ্যবান নন। অনেকের চিরতরে দৃষ্টি হারিয়েছে। তাদের জন্য পুনর্বাসন পরিকল্পনা সাজিয়েছেন চিকিৎসকরা।

একটি ভয়ঙ্কর পরিসংখ্যান

২০২৪ সালের জুলাইয়ে শুধু ঢাকাতেই ১ হাজারের বেশি মানুষ চোখে আঘাত পান, যার মধ্যে ৭০০ জনকে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে জরুরি চিকিৎসা দেওয়া হয়। এই পরিসংখ্যান শুধুই চোখের—আঘাত ছিল হৃদয়ে, গণতন্ত্রে, মানুষে।

যারা চোখ হারিয়েছেন, তারা কেবল আলো নয়—দেশের সম্ভাবনাও হারিয়েছেন। গণতন্ত্রের নামে চোখ অন্ধ করে দিলে ইতিহাস ক্ষমা করবে না। আজ যারা চিকিৎসা পেলেন, তারা সৌভাগ্যবান। বাকিদের কী হবে?

মানবতা যদি চোখে না ফেরে, তাহলে রাজনীতি অন্ধই রয়ে যাবে।