আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা কে কোথায়?

নিজস্ব প্রতিবেদক: ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পালাতক জীবন-যাপন করছেন আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও শীর্ষ নেতারা। যাদের বেশীর ভাগ অবস্থান করছেন ভারতে কলকাতায়। প্রথম আলোর অনুসন্ধানী একটি প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।

তাদের তথ্যমতে, আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগ, যুব মহিলা লীগ ও ছাত্রলীগের সাবেক একাধিক নেতা জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী অঙ্গসংগঠনের অনেক নেতা-কর্মী কলকাতায় পালিয়ে আছেন। সাবেক কিছু মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের থাকছেন কলকাতার অভিজাত রাজারহাট নিউটাউন এলাকায়। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালও কলকাতা নিউটাউন এবং সাবেক সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম কলকাতার অভিজাত এলাকা টাটা হাউজিং অ্যাভিনিডাতে বড় আকারের দুটি ফ্ল্যাট নিয়ে থাকছেন।

এছাড়াও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, সাবেক এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী ও রাজশাহী-৫ আসনের সাবেক এমপি আবদুল ওয়াদুদ দারা, রাজশাহী-৩ আসনের সাবেক এমপি আয়েন উদ্দিন, সাবেক গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরিফ আহমেদ, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, কুমিল্লার সাবেক এমপি বাহাউদ্দিন বাহারসহ অনেক নেতা কলকাতায় অবস্থান করছেন।

কলকাতা থেকে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডের মামলার আসামি এসব পলাতক নেতারা। তবে কলকাতায় তারা আয়েশিভাবে থাকছেন। কোনো কিছুরই অভাব নেই সেখানে। গাড়ি-বাড়ি, ব্যক্তিগত কর্মী, ব্যক্তিগত চিকিৎসক থেকে শুরু করে নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে থাকছেন তারা। কেউ কেউ ভারতে তাদের সন্তানদের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়েছেন। তাদের অনেকেরই ভারতে ব্যবসা-বাণিজ্য আর সম্পদ আছে। তাই পালাতক থাকলেও অর্থসম্পদের কোনো সমস্যা হচ্ছে না।

কলকাতায় বাংলাদেশ দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, ভারতের সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ব্যাপারে ‘ওয়াকিবহাল’। তাই কোনো অপরাধ না করলে তাঁদের ‘হয়রানি’ করা হয় না।

জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের কলকাতার অভিজাত এলাকা রাজারহাট নিউটাউনের একটি ফ্ল্যাটে স্ত্রীকে নিয়ে থাকছেন। তিনি ডিএলএফ নিউটাউন হাইটস প্লাজায় আছেন। এটি মূলত হাইরাইজ কমপ্লেক্স, যেখানে অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা আছে। ওবায়দুল কাদেরকে নিরাপত্তা দেওয়া, তাঁর ফ্ল্যাট ভাড়ার টাকা দেওয়া, থাকা-খাওয়া, চিকিৎসাসহ যাবতীয় খরচ বহন করেন ফেনী-২ আসনের সাবেক এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারী। হাজারী নিজেও ওই ভবনের আরেকটি ফ্ল্যাটে থাকেন বলে জানা গেছে।

নিউটাউন হাইটস প্লাজায় আরও থাকেন টাঙ্গাইল-২ আসনের আলোচিত সাবেক সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ওরফে ছোট মনির। ছোট মনির সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী ও শ্রমিকনেতা শাজাহান খানের জামাতা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা কলকাতা থেকে জানিয়েছেন, দলের সাধারণ সম্পাদক বাসা থেকে খুব একটা বের হন না। তবে মাঝেমধ্যে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে যান। ওবায়দুল কাদের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে দেখাও করেন না। তিনি মূলত নিজাম হাজারী ও ছোট মনিরের বলয়ের মধ্যেই থাকেন।

কলকাতার নিউটাউন আবাসিক এলাকার আরেক অভিজাত কমপ্লেক্স ‘রোজডেল গার্ডেন’। এই কমপ্লেক্সের ৩ নম্বর অ্যাকশন এরিয়ার ২ নম্বর টাওয়ারের ১১ তলার ১১-সি ফ্ল্যাটে থাকেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। নিউটাউনের এই ফ্ল্যাটে স্ত্রী, মেয়ে ও জামাতাকে নিয়ে থাকেন শেখ হাসিনার অন্যতম আস্থাভাজন সাবেক এই মন্ত্রী।

কলকাতায় পুরোদস্তুর সংসার পেতে বসেছেন ফেনী-১ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম। তিনি স্ত্রী, ভাইবোন ও পরিবারের বেশির ভাগ সদস্যকে নিয়ে নিউটাউনের অভিজাত এলাকা টাটা হাউজিং অ্যাভিনিডাতে থাকেন। সেখানে তারা বিশাল আকারের দুটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছেন। এছাড়াও ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানও কলকাতার রাজারহাট নিউটাউনের মতো ধনাঢ্য এলাকায় ফ্ল্যাট ভাড়া করে থাকছেন।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক পূর্ব কলকাতার সল্টলেকের একটি অত্যাধুনিক কমপ্লেক্সের ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকেন। স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা আর অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন ওই কমপ্লেক্সে অনেক নামীদামি লোকজনও থাকেন। সাবেক পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী নানকের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী, মেয়ে ও জামাতা থাকেন। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম স্ত্রীকে নিয়ে থাকছেন কলকাতার আরেক আবাসিক এলাকা তপসিয়ায়।

কলকাতায় কর্মরত একাধিক সাংবাদিক জানান, আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের মধ্যে শেখ ফজলুল করিম সেলিম, শেখ হেলাল উদ্দিন ও তার ছেলে শেখ তন্ময়, নসরুল হামিদ (বিপু), অসীম কুমার উকিল ও তাঁর স্ত্রী অধ্যাপক অপু উকিল, যশোরের সাবেক এমপি শাহীন চাকলাদার, যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীসহ অনেকেই কলকাতাসহ ভারতের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করছেন।

সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল কলকাতায় ভাড়া বাসায় থাকছেন। তাঁর ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত স্ত্রী ও দুই মেয়ে লন্ডনে থাকতেন। সম্প্রতি নওফেল তাদের কলকাতায় নিয়ে যান। তবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ দিল্লিতে অবস্থান করছেন। সেখানকার একটি হাসপাতালে তার স্ত্রীর চিকিৎসা চলছে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক কলকাতা ও দিল্লিতে আসা-যাওয়ার মধ্যে থাকেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে দেখা করেন না শেখ রেহানার দেবর তারিক সিদ্দিক। কলকাতায় অনেকটা লোকচক্ষুর আড়ালে থাকেন বলে জানা গেছে।

ভারতে নিজের বাড়িতে থাকছেন আওয়ামী লীগের নেতা আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ ও তার ছেলে বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। অন্যদিকে সাবেক চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটন ও তার ভাই যুবলীগের নেতা নিক্সন চৌধুরী থাকছেন কলকাতায়। তবে নিক্সন চৌধুরী কলকাতা থেকে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে আসা যাওয়া করেন।

এদিকে, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী মির্জা আজম চেন্নাইয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানা গেছে। দলের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক পংকজ দেবনাথ সপরিবার কলকাতায় আছেন।

এ ছাড়া আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সাবেক হুইপ আতিকুর রহমান আতিক, কক্সবাজারের সাবেক সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, সাবেক বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, সিরাজগঞ্জের সাবেক আলোচিত সংসদ সদস্য হাবিবে মিল্লাত, ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর, মাহমুদ হাসান রিপন ও গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লা খানসহ অনেকেই কলকাতায় আছেন।

কলকাতার সিনিয়র সাংবাদিক শুভজিৎ বাগচী জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী, সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য এবং সহযোগী ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা কলকাতার সল্টলেক, রাজারহাট নিউটাউন, বারাসাত, তপসিয়া, বর্ধমান, বালিগঞ্জ, যাদবপুর, দমদম, গড়িয়াহাট, বশিরহাট, বেহালা, ভবানীপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া করে থাকেন। আবার অনেকে মারকুইস স্ট্রিট ও পার্ক স্ট্রিটের বিভিন্ন হোটেলেও কম খরচে থাকছেন।

যুক্তরাজ্যে আছেন যেসব নেতা

৫ আগস্টের পর সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ অন্য অনেক নেতার মতো দেশেই লুকিয়ে ছিলেন। পরে তিনি বেলজিয়ামে চলে যান। হাছান মাহমুদ বেলজিয়ামের নাগরিক। তবে তাঁর ছেলে লন্ডনে পড়ালেখা করেন। ছেলের সঙ্গে ঈদ উদ্‌যাপন করতে রমজান মাসে তিনি লন্ডনে যান। এখন সেখানেই অবস্থান করছেন। সম্প্রতি পূর্ব লন্ডনের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফকে দেখতে যান হাছান মাহমুদ। পরে আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে নিয়ে রেস্টুরেন্টে গিয়ে কফি খান। আওয়ামী লীগের চার সাবেক মন্ত্রীর একসঙ্গে কফি খাওয়ার ছবি ফেসবুকে প্রচার হয়।

পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন লন্ডনের গ্যাংসহিল এলাকার আল-কালাম মসজিদে ঈদের নামাজ পড়েন হাছান মাহমুদ। ঈদের নামাজের সেই ছবিও আলোচিত হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

ইস্ট লন্ডনের নিউবেরি পার্ক এলাকায় দুই মেয়ের বাসায় থাকছেন সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আবদুর রহমান। তিনি টেলিফোনে এই প্রতিবেদককে জানান, তাঁর শারীরিক অবস্থা বেশ খারাপ। লন্ডনের বার্ডস হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছে। আরেক সাবেক মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমও লন্ডনে থাকছেন। তাঁর দুই ছেলে-মেয়ে বার অ্যাট ল করার সুবাদে আগে থেকেই সেখানে থাকতেন। এ ছাড়া সাবেক প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী তাঁর লন্ডনের বাসায় আছেন।

সাবেক নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী যুক্তরাজ্যের অ্যাসেক্সের রমফোর্ড এলাকায় বসবাস করছেন। পড়ালেখার সুবাদে সেখানে আগে থেকেই তাঁর একমাত্র মেয়ে থাকেন। পরে তাঁর স্ত্রী লন্ডনে মেয়ের কাছে চলে যান। যুক্তরাজ্য থেকে টেলিফোনে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘কবে নাগাদ দেশে ফিরতে পারব, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।’

লন্ডনের অভিজাত এলাকা সেন্ট্রাল লন্ডনে থাকেন আলোচিত সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) তথ্যমতে, ২০১৬ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে সাইফুজ্জামান চৌধুরী প্রায় ৫ হাজার ৭২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৬২০টি বাড়ি কেনেন। আওয়ামী লীগের নেতা ও সাবেক হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনও লন্ডনের অভিজাত এলাকায় থাকেন।

ছাত্র-জনতার আন্দোলন তুঙ্গে থাকার সময় ৩ আগস্ট দেশ ছাড়েন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। তাঁর বড় ছেলে লন্ডনে ও ছোট ছেলে যুক্তরাষ্ট্রে পড়ালেখা করেন। তাপস কিছুদিন আগে সিঙ্গাপুর থেকে লন্ডনে পাড়ি জমিয়েছেন। বর্তমানে সপরিবার সেখানেই থাকছেন। এছাড়াও সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীরও বর্তমান ঠিকানা যুক্তরাজ্যের ইস্ট লন্ডন।

যুক্তরাষ্ট্রে আছেন যে নেতারা

নিউইয়র্কের জ্যামাইকাতে সপরিবার আছেন নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। ৪ এপ্রিল স্থানীয় ‘ঘরোয়া’ নামের বাংলাদেশি মালিকানাধীন এক রেস্টুরেন্টে তিনি বন্ধুবান্ধব নিয়ে কফি খেয়েছেন। সেই ছবিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখা গেছে।

এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন সাবেক উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়ুয়া, সাবেক হুইপ সানজিদা খানম ও আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম।

অন্যান্য দেশে কারা পালিয়ে আছেন

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের শ্বশুর ও সাবেক স্থানীয় সরকারমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন। ২০১৯ সালে পারিবারিক কিছু ঝামেলা তৈরি হওয়ায় তাঁকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর ফরিদপুরের রাজনীতিতে অস্তিত্ব হারিয়ে ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে তিনি সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ছোট মেয়ের কাছে চলে যান। সেখানেই ছিলেন অনেক দিন। পরে দুবাইয়ে তাঁর ছেলে খন্দকার মাশরুর হোসেনের কাছে চলে যান। সে সময় থেকেই দুবাইয়ে থাকছেন ফরিদপুরের আলোচিত রাজনীতিবিদ খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মাদ আলী আরাফাতও ৫ আগস্টের পর আত্মগোপনে চলে যান। ঢাকা–১৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সম্প্রতি টেলিফোনে এই প্রতিবেদককে বলেন, তাঁকে নিয়ে গণমাধ্যমে মুখরোচক গল্প প্রকাশিত হয়েছে। তবে তিনি দেশে, নাকি বিদেশে আছেন-এমন প্রশ্নের জবাব দেননি মোহাম্মদ এ. আরাফাত।