শুভেন্দু অধিকারী: পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা বাংলাদেশের থেকেও খারাপ
টুইট ডেস্ক: ভারতের নতুন ‘ওয়াকফ সংশোধনী আইন, ২০২৫’ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলায় ব্যাপক বিক্ষোভ ও অস্থিরতা সৃষ্টি হওয়ার পর, রাজ্যের বিরোধী দলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারী এই পরিস্থিতির তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি বাংলাদেশের থেকেও খারাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কলকাতায় বিজেপির একটি কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শুভেন্দু বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি এখন বাংলাদেশের থেকেও খারাপ। মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন এলাকায় গতকাল একের পর এক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন স্থানে হিন্দুদের উপর আক্রমণ চালানো হয়েছে, মন্দির ভাঙচুর করা হয়েছে, দোকান-পাটে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।”
শুভেন্দু বলেন, “ধূলিয়ান, চাঁপদানি, কড়েয়া থানা এলাকায় হিন্দুদের পতাকা নামানো হয়েছে। মুর্শিদাবাদে ৩০টির বেশি হিন্দু দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে, একই ঘটনা ২০১৯ সালে উমরপুর, নিমতিতাতেও ঘটেছিল। এসব ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতির বিপদজ্জনক চিত্র তুলে ধরে।”
মুর্শিদাবাদে সংশোধিত ওয়াকফ আইন বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেছেন, পুলিশের কাছে তাদের উপর লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল ও স্টান গ্রেনেড ব্যবহারের কথা। অন্যদিকে, পুলিশ জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমা ও ইট-পাটকেল ছোড়ে, যার কারণে পুলিশ ‘অ্যাকশন’ নিতে বাধ্য হয়েছে।
শুভেন্দু অধিকারী রাজ্য প্রশাসনের সমালোচনা করে বলেন, “মুখ্যসচিব ও জেলাশাসককে বারবার বলেছি, কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য নেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু প্রশাসন তেমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি, যা পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করেছে।”
এছাড়া, তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনকালে রাজ্যের হিন্দু জনগণের উপর নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছেন। শুভেন্দু বলেন, “এই শাসনে হিন্দু মন্দির এবং হিন্দু ধর্মীয় প্রতীকগুলোর ওপর আক্রমণ করা হচ্ছে। জনগণের প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি।”
সংশোধিত ওয়াকফ আইন-
ভারতের নতুন ওয়াকফ সংশোধনী আইনে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। এর আওতায় ওয়াকফ সম্পত্তির দেখভাল করার দায়িত্বে থাকা ওয়াকফ বোর্ডের গঠন, অমুসলিমদের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা, এবং সরকারের কর্তৃত্বে কোন সম্পত্তি ওয়াকফ হিসেবে বিবেচিত হবে তা নির্ধারণের বিধান রাখা হয়েছে। এই আইন নিয়ে বিতর্ক চলছে, বিশেষ করে অমুসলিমদের ওয়াকফ বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে।
অমিত শাহ এই সংশোধনী আইন নিয়ে বলেন, “এই আইনে ওয়াকফ বোর্ডে অমুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত করার কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এটা প্রশাসনিক কাজ, ধর্মীয় নয়।”
এদিকে, নতুন আইন নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে দুশ্চিন্তার কিছু বিষয় থাকলেও, তা রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচিত হয়ে উঠেছে।