জীবিত অভিবাসীদের নাম মৃ(তদে)র তালিকায়, বিতাড়ন নীতি কার্যকর
টুইট ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসীদের বিতাড়ন করতে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। এবার, অভিবাসীদের “স্বেচ্ছা নির্বাসনে” বাধ্য করতে তাদের সামাজিক সুরক্ষা নম্বর (এসএসএন) বাতিল করার পরিকল্পনা নিয়েছে প্রশাসন। এই পদক্ষেপে, মৃতদের তালিকায় জীবিত অভিবাসীদের নাম অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে তাদের সরকারের সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত হাজার হাজার অভিবাসীর অস্থায়ী বৈধ অবস্থান বাতিল করতে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে। এরই মধ্যে, এসব অভিবাসীদের বৈধভাবে প্রাপ্ত সোশ্যাল সিকিউরিটি নম্বর (এসএসএন) বাতিল করা হচ্ছে, যাতে তারা আর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ক্রেডিট কার্ড, চাকরি কিংবা সরকারি সুবিধা লাভ করতে না পারেন।
অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, এই পদক্ষেপ বাস্তবায়নে ব্যবহার করা হচ্ছে “ডেথ মাস্টার ফাইল”, যা সাধারণত মৃতদের তালিকা সংরক্ষণে ব্যবহৃত হয়। এখন, এই তালিকায় যুক্ত হচ্ছে জীবিত অভিবাসীদের নাম, যাদের সরকার “আইনি দিক থেকে মৃত” হিসেবে বিবেচনা করতে চায়। এর ফলে, তারা আর এসএসএন ব্যবহার করতে পারবেন না, যা যুক্তরাষ্ট্রে পরিচয় নিশ্চিতকরণ, চাকরি, ব্যাংক লেনদেন এবং চিকিৎসা সেবার জন্য অপরিহার্য।
চলতি সপ্তাহে ৬ হাজার ৩০০ অভিবাসীর নাম এই ডেটাবেসে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রশাসন দাবি করছে, এই তালিকায় যাদের নাম রয়েছে তারা “অপরাধে দোষী সাব্যস্ত” বা “সন্ত্রাসী সন্দেহভাজন” হিসেবে চিহ্নিত। তবে, ভবিষ্যতে এই তালিকা আরও বিস্তৃত হতে পারে এবং যেকোনও “অননুমোদিত অভিবাসী” এতে যুক্ত হতে পারেন।
এই পদক্ষেপ ইতোমধ্যেই মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। সমালোচকেরা বলছেন, জীবিত মানুষকে “মৃত” ঘোষণা করা এবং তাদের পরিচয় বাতিল করা কেবল আইনি নয়, বরং নৈতিক দিক থেকেও অত্যন্ত অগ্রহণযোগ্য। এতে তারা সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে মারাত্মকভাবে প্রান্তিক হয়ে পড়বেন, যা তাদের নিজ দেশে ফেরার জন্য বাধ্য করবে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে কোনো আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা এখনো দেওয়া হয়নি। তবে নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, এটি ট্রাম্পের “কঠোর অভিবাসন” নীতির একটি সম্প্রসারণ, যা সীমান্ত নিরাপত্তা, অবৈধ অভিবাসন কমানো এবং যুক্তরাষ্ট্রে “শুদ্ধ নাগরিকত্ব” রক্ষার উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে।
সমালোচকদের মতে, এই পদক্ষেপ মানবিক সংকটকে আরও গভীর করবে, বিশেষত তাদের জন্য যারা বহু বছর ধরে মার্কিন সমাজে অবদান রেখেছেন এবং শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করছেন।