উপদেষ্টার নির্দেশ অমান্য করে বিএমডিএ চেয়ারম্যানের তদন্ত কমিটি
নিজস্ব প্রতিবেদক: বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) সদ্য সাবেক নির্বাহী পরিচালক শফিকুল ইসলামকে দপ্তর ছাড়তে বাধ্য করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংস্থার চেয়ারম্যান ড. এম আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে ‘মনগড়া’ তদন্ত কমিটি গঠনের অভিযোগ উঠেছে। বিএমডিএ পরিচালনা বোর্ডের সদস্য সাইফুল ইসলাম হীরক এ অভিযোগ তুলেছেন।
হীরকের দাবি, কৃষি উপদেষ্টা ও বিএমডিএ বোর্ড সদস্য জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর নির্দেশনা অনুযায়ী তাকে আহ্বায়ক করে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের কথা ছিল। কিন্তু উপদেষ্টার নির্দেশ অমান্য করে চেয়ারম্যান নিজ উদ্যোগে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।
এই বিষয়ে চেয়ারম্যানকে ১০ এপ্রিল চিঠি দিয়েছেন হীরক। তিনি চিঠিতে লেখেন, “২৩ মার্চ নির্বাহী পরিচালকের সঙ্গে এক অনভিপ্রেত ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেন কৃষি উপদেষ্টা। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী আমাকে আহ্বায়ক করে তদন্ত কমিটি গঠনের কথা ছিল।”
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়,
২ এপ্রিল চেয়ারম্যান হোয়াটসঅ্যাপে একটি সভার আমন্ত্রণ জানান। তবে পরে জানা যায়, তিনি ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য ঠাকুরগাঁও চলে যান। এরপর ৮ এপ্রিল হীরক জানতে পারেন, ৩ এপ্রিল একটি তদন্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং ১০ এপ্রিল আরেকটি সভা ডাকা হয়েছে।
এই প্রক্রিয়াকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উল্লেখ করে হীরক জানান, তিনি ১০ এপ্রিলের সভায় অংশ নেননি। পাশাপাশি, ‘তথাকথিত’ ও ‘পরিকল্পিত’ তদন্ত কমিটি বাতিল করে কৃষি উপদেষ্টার নির্দেশনা অনুযায়ী নতুন কমিটি গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, অতিরিক্ত সচিব শফিকুল ইসলাম গত বছরের ১৪ জুলাই বিএমডিএর ইডি হিসেবে যোগ দেন। ২৩ ফেব্রুয়ারি তাকে রেশম উন্নয়ন বোর্ডে বদলি করা হয়, কিন্তু তিনি বিএমডিএ ছাড়েননি। এক মাস পর, ২৩ মার্চ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী তাকে দপ্তর ছাড়তে বাধ্য করেন।
পরবর্তীতে শফিকুল ইসলাম মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দায়ের করেন এবং ১৩ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় ৬০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকেও আসামি করা হয়।
এ ঘটনার পর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম খানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। পাশাপাশি একজন নির্বাহী প্রকৌশলী ও একজন সহকারী প্রকৌশলীকে সাময়িক বরখাস্ত এবং আটজনকে শোকজ করা হয়েছে।
এই সব ঘটনায় বিএমডিএ-তে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। অভিযোগ রয়েছে, চেয়ারম্যানের সম্মতিতেই ইডিকে দপ্তর ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছিল।
এই বিষয়ে কথা বলতে বিএমডিএ চেয়ারম্যান ড. এম আসাদুজ্জামানকে ফোন করলে তিনি পরিচয় জানার পর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন এবং পরে আর ফোন ধরেননি।