প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে কোটা সংস্কার: মেধাই হবে মূল বিবেচ্য
টুইট ডেস্ক: প্রাথমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে দীর্ঘদিনের বিতর্কিত কোটা-নির্ভর নিয়োগব্যবস্থার অবসান ঘটাতে যাচ্ছে সরকার। ‘প্রস্তাবিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ২০২৫’-এর খসড়ায় নারী, পোষ্য এবং পুরুষ কোটার বিলুপ্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
পরিবর্তে শুধুমাত্র উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ৭ শতাংশ কোটা রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে—যার মধ্যে থাকবে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও প্রতিবন্ধী কোটাভুক্ত প্রার্থীরা।
কেন এই পরিবর্তন?
দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ ছিল, কোটানির্ভর এই নিয়োগব্যবস্থায় প্রকৃত মেধাবীরা বঞ্চিত হচ্ছেন। অনেকে ৬৫ নম্বর পেয়ে চাকরি পেলেও, ৭৫ নম্বর পাওয়া প্রার্থী বাদ পড়ছেন—এমন বাস্তবতা নিয়োগ প্রক্রতির প্রতি প্রশ্ন তুলে দেয়। সরকারের এই নতুন পদক্ষেপ সেই বৈষম্য কমানোর একটি সাহসী পদক্ষেপ বলে মনে করছেন শিক্ষাবিদরা।
নতুন বাস্তবতা
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্যমতে, নতুন বিধিমালা অনুযায়ী ৯৩ শতাংশ নিয়োগ হবে শুধুই মেধার ভিত্তিতে। আগস্ট-সেপ্টেম্বরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হতে পারে। বর্তমানে দেশে ৮ হাজারেরও বেশি শূন্যপদ রয়েছে, যা বিজ্ঞপ্তির সময় আরও বাড়তে পারে।
প্রশাসনিক ভাবনা
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার জানান, কোটাব্যবস্থা সংশোধনের পাশাপাশি আরও কিছু সংস্কার আনা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে সহকারী শিক্ষকদের মধ্য থেকেই যোগ্যদের শতভাগ পদোন্নতির মাধ্যমে প্রধান
শিক্ষক পদে উন্নীত করার ব্যবস্থা।
বিশ্লেষণ ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি
এই সংস্কার শুধু মেধাভিত্তিক নিয়োগ নিশ্চিত করবেই না, বরং চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে দীর্ঘদিনের হতাশা ও অনিশ্চয়তা দূর করবে। দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শিক্ষা যাঁদের হাতে—তাঁদের নিয়োগ যদি ন্যায়নিষ্ঠভাবে হয়, তাহলে শিক্ষা ব্যবস্থার ভীতও শক্ত হবে।
তবে এটাও নিশ্চিত করতে হবে, কোটা প্রাপ্ত বিশেষ গোষ্ঠী যেন এই পরিবর্তনে বৈষম্যের শিকার না হয়।