যুক্তরাষ্ট্রে চীনা পণ্যে ১০৪% শুল্ক কার্যকর, বাণিজ্যযুদ্ধে নতুন উত্তেজনা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আজ বুধবার (৯ এপ্রিল) থেকে যুক্তরাষ্ট্রে চীনা কিছু পণ্যের ওপর সর্বোচ্চ ১০৪ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণার প্রেক্ষিতে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট মঙ্গলবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক কার্যত দ্বিগুণেরও বেশি হয়ে গেল।
এই সিদ্ধান্তে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য অঙ্গনে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এর জবাবে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একে ‘ভুলের ওপর ভুল’ বলে অভিহিত করে পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, মার্কিন প্রশাসনের এই পদক্ষেপ মূলত চীন থেকে ফেনটানিল নামক মারাত্মক মাদকদ্রব্যের প্রবাহ ঠেকানোর একটি চেষ্টার অংশ হলেও এর প্রভাব অনেক দূর পর্যন্ত ছড়াবে। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।
২০২৩ সালে চীন ছিল যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় বৃহত্তম আমদানিকারক দেশ। ওই বছর চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য এসেছিল প্রায় ৪৩৯ বিলিয়ন ডলারের, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র রপ্তানি করেছে মাত্র ১৪৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। এত বড় বৈষম্যের মধ্যেই এই ধরনের চড়া শুল্ক আরোপের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান উৎপাদন খরচ ও প্রতিযোগিতার চাপের মুখে পড়বে।
এই শুল্ক বৃদ্ধির ফলে চীনা পণ্য আমদানিকারক ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, যা শেষ পর্যন্ত ভোক্তার ওপর চাপ সৃষ্টি করবে। অনেক শিল্প খাতে কর্মসংস্থান হ্রাস পেতে পারে। বিশেষ করে যেসব খাতে কাঁচামাল বা প্রযুক্তি চীননির্ভর, সেখানে উৎপাদন ব্যয় বাড়বে এবং ছাঁটাইয়ের ঝুঁকি তৈরি হবে। এছাড়া উন্নয়নশীল দেশগুলোর বাজারেও এর প্রভাব পড়তে পারে।
বাণিজ্যকে কেবল কাগুজে চুক্তি বা সংখ্যার খেলা ভাবা একধরনের একচোখা দৃষ্টিভঙ্গি। বাস্তবে এর পেছনে কাজ করে মানুষের জীবনের গল্প, কর্মসংস্থান, দ্রব্যমূল্য এবং বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা।
যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্যযুদ্ধের এই নতুন ধাপে তাই বিশ্বের অনেক দেশই দুশ্চিন্তায় পড়েছে—কোথায় গিয়ে থামবে এই সংঘর্ষ?