ইরানের সঙ্গে সরাসরি পারমাণবিক আলোচনায় বসছে যুক্তরাষ্ট্র: ট্রাম্প
টুইট ডেস্ক: বহুদিনের উত্তেজনা ও অস্বীকৃতির পর অবশেষে পারমাণবিক ইস্যুতে সরাসরি আলোচনায় বসছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেই। একইসঙ্গে ইরানের পক্ষ থেকেও আলোচনায় অংশগ্রহণের বিষয়টি স্বীকার করা হয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, আগামী শনিবার (১২ এপ্রিল) ওমানে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে। বিষয়টিকে “একটি সুযোগ এবং পরীক্ষা উভয়ই” হিসেবে উল্লেখ করেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি।
ওভাল অফিসে এক বক্তৃতায় ট্রাম্প বলেন, “শনিবার আমাদের ইরানের সঙ্গে বড় একটি বৈঠক রয়েছে। আমরা তাদের সঙ্গে সরাসরি কাজ করছি এবং সম্ভবত একটি চুক্তি হতে চলেছে। যদি সেটা সম্ভব হয়, তবে তা হবে চমৎকার।”
তবে তিনি সতর্ক করে দিয়ে আরও বলেন, “যদি আলোচনা সফল না হয়, তাহলে এটি ইরানের জন্য খুব খারাপ দিন হবে। ইরানের হাতে পারমাণবিক অস্ত্র থাকতে পারে না।”
এর আগে, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। এর প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প সামরিক পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।
বৈঠকের পেছনের প্রেক্ষাপট:
গত মাসেই সংযুক্ত আরব আমিরাতের একজন মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে ইরানের প্রতি আলোচনার প্রস্তাব পাঠান ট্রাম্প, যদিও তা প্রাথমিকভাবে প্রত্যাখ্যান করেছিল তেহরান। তবে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে পরোক্ষ আলোচনায় আগ্রহ দেখায় ইরান।
২০১৫ সালের চুক্তি ও বর্তমান প্রেক্ষাপট:
২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে পরমাণু কর্মসূচি সীমিত করতে যুক্তরাষ্ট্রসহ ছয়টি দেশ (ফ্রান্স, ব্রিটেন, জার্মানি, চীন, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র) ‘জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (JCPOA)’ নামে একটি চুক্তিতে পৌঁছায়। তবে ২০১৮ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন একে “ত্রুটিপূর্ণ” বলে উল্লেখ করে চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেয়।
এরপর থেকেই তেহরান ধীরে ধীরে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং আন্তর্জাতিক উদ্বেগের কারণ হয়ে ওঠে। ইরান এখন এমন মাত্রায় ইউরেনিয়াম মজুদ করছে, যা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির উপযোগী পর্যায়ের কাছাকাছি বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
চুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা:
ট্রাম্প আলোচনার অগ্রগতি বা অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিদের নাম প্রকাশ না করলেও বৈঠকটি ঘিরে আন্তর্জাতিক পরিসরে আলোচনার নতুন দ্বার খুলে গেছে। আলোচনার সফলতা নির্ভর করবে দুই দেশের পারস্পরিক অবস্থানের উপর।