‘ট্রাম্প অ্যামেরিকাকে নজিরবিহীন বিপদে ফেলেছেন’: সেনেটর স্যান্ডার্সের বিস্ফোরক মন্তব্য

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং তৃতীয় মেয়াদের জন্য প্রার্থী হতে আগ্রহী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে সরব হলেন দেশটির প্রখ্যাত স্বতন্ত্র সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স।

সম্প্রতি সিবিএস সানডে মর্নিং-কে দেওয়া এক খোলামেলা সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে এক নজিরবিহীন বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। তিনি গণতন্ত্র নয়, দেশকে ধনী শ্রেণির অভিজাততন্ত্রের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন।”

বার্নি স্যান্ডার্সের এই বক্তব্য ইতিমধ্যেই মার্কিন গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক মহলে তীব্র আলোড়ন তুলেছে। তার মতে, কংগ্রেস এবং মূলধারার গণমাধ্যম ট্রাম্পের অনিয়ম ও কর্তৃত্ববাদী আচরণের বিরুদ্ধে যথেষ্ট জোরালো অবস্থান নিচ্ছে না।

‘বিলিওনেয়ারদের প্রেসিডেন্ট’

স্যান্ডার্স বলেন, “দেশের প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ পে চেকের মাধ্যমে মাস চলায় বাধ্য। অথচ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কেবল বিলিওনেয়ারদের নিয়ে ভাবছেন। তার নীতিগুলো ধনীদের পক্ষে কাজ করছে, শ্রমজীবী মানুষের বিপক্ষে। এ এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি।”

তিনি আরো বলেন, এখন যুক্তরাষ্ট্রে মানুষ শুধু রাজনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে না, বরং এক গভীর নৈতিক এবং সাংবিধানিক সংকটের সম্মুখীন হচ্ছে।

‘ভোট কেনার রাজনীতি বন্ধ করতে হবে’

দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হলে অর্থনৈতিক দানবদের প্রভাব ও ভোট কেনার রাজনীতি বন্ধ করার আহ্বান জানান স্যান্ডার্স। তিনি বলেন, “ট্রাম্প ও ইলন মাস্কের মতো ধনীদের পয়সায় রাজনীতি চলছে। এভাবে গণতন্ত্র চলে না। জনগণের হাতে রাজনীতি ফেরাতে হবে।”

তার মতে, এখন সময় এসেছে ডেমোক্র্যাটিক পার্টিকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে—তারা শ্রমিক শ্রেণির পাশে দাঁড়াবে, নাকি ধনীদের সঙ্গী হয়ে যাবে।

তৃতীয় মেয়াদে ট্রাম্প প্রার্থী হওয়া উচিত নয়

সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পের তৃতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে স্যান্ডার্স বলেন, “যারা সংবিধানে বিশ্বাস করে না, কেবল তারাই ট্রাম্পের মতো ব্যক্তির ফেরার পক্ষে যুক্তি দেখাতে পারে।”

গণবিক্ষোভ ও ট্রাম্প বিরোধী হাওয়া

ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই একের পর এক সমালোচনা ও প্রতিবাদের মুখে পড়ছেন। সর্বশেষ শনিবার, যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে হাজারো মানুষ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আসে। বিক্ষোভকারীরা তাকে ‘গণতন্ত্রের জন্য হুমকি’ আখ্যা দেন। ব্যানার-প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, “ট্রাম্প ইজ এ থ্রেট টু আমেরিকা”, “ডেফেন্ড ডেমোক্রেসি, ডিফিট ট্রাম্প”।

এই বিক্ষোভের রেশ ধরেই স্যান্ডার্স রবিবারের (৬ এপ্রিল) সাক্ষাৎকারে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন।

আবারও প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হবেন বার্নি?

২০১৬ ও ২০২০ সালে ডেমোক্র্যাটিক মনোনয়নের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন বার্নি স্যান্ডার্স। ৮৩ বছর বয়সেও রাজনৈতিকভাবে তিনি যথেষ্ট সক্রিয়। অনেকে মনে করছেন, ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাকে আবারও লড়াই করতে দেখা যেতে পারে।

যদিও এবারের সাক্ষাৎকারে তিনি সে বিষয়ে সরাসরি কিছু বলেননি, তবে তার বক্তব্যে ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের ইঙ্গিত স্পষ্ট।