পঞ্চম অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ‘ঢাকার রিকশা ও রিকশাচিত্র’: ইউনেস্কো

ছবি : সংগৃহীত

টুইট ডেস্ক : ‘ঢাকার রিকশা ও রিকশাচিত্র’ ইউনেস্কোর ‘অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য’ হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। আফ্রিকার দেশ বতসোয়ানার কাসানে শহরে অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ বিষয়ক কনভেনশনের ১৮তম আন্তরাষ্ট্রীয় পরিষদের সভায় বুধবার (০৬ ডিসেম্বর ২০২৩) এই বৈশ্বিক স্বীকৃতি দেয়া হয়।

জামদানি শিল্প, শীতল পাটিবয়ন শিল্প, বাউল গান ও মঙ্গল শোভাযাত্রার পর প্রায় ৬ বছরের বিরতিতে বাংলাদেশের পঞ্চম অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসাবে ‘ঢাকার রিকশা ও রিকশাচিত্র’ এ স্বীকৃতি লাভ করেছে।

রিকশাচিত্র ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। তাই এই ঐতিহ্যকে বাঁচাতে ইউনেসকো এই বাহনকে ইনটেনজিবল কালচারাল হেরিটেজ ঘোষণা করল।

এর আগে বাংলাদেশের বাউলগান (২০০৮), জামদানি বুননশিল্প (২০১৩), মঙ্গল শোভাযাত্রা (২০১৬) ও শীতলপাটি বুননশিল্পের (২০১৭) পর পঞ্চম বিমূর্ত ঐতিহ্য হিসেবে ইউনেসকোর ‘ইনটেনজিবল কালচারাল হেরিটেজ হিসেবে স্বীকৃতি পায়।

এই স্বীকৃতির ফলে গত আট দশক ধরে চলমান ‘রিকশা ও রিকশাচিত্র’ একটি বৈশ্বিক ঐতিহ্য হিসাবে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি লাভ করল।

বাংলাদেশের সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ ও সচিব খলিল আহমদ এই অর্জনকে বাংলাদেশের জন্য বিরল সম্মান হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

বাংলাদেশের রিক্সাচিত্র ইউনেস্কোর অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসাবে স্বীকৃতি পাওয়ার পর সভায় উপস্থিত আন্তরাষ্ট্রীয় পরিষদের সদস্যবৃন্দ, উপস্থিত মন্ত্রিবর্গ, রাষ্ট্রদূতসহ শতাধিক দেশের প্রতিনিধিবৃন্দ বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে অভিনন্দন জানান এবং এ চিত্রকর্মের বৈচিত্র্যপূর্ণ বহিপ্রকাশে তাদের সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।

গত ১৫ নভেম্বর ৪২তম সাধারণ পরিষদের সভায় বাংলাদেশ ইউনেস্কো নির্বাহী পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়।

ইউনেস্কোতে বাংলাদেশের এই ধারাবাহিক সাফল্যকে সংশ্লিষ্ট মহল বাংলাদেশের কূটনৈতিক অগ্রযাত্রা হিসাবে অভিহিত করেন।

উল্লেখ্য, গত ছয় বছর যাবত এ চিত্রকর্মের নিবন্ধন ও স্বীকৃতির প্রক্রিয়া চলমান থাকলেও প্রথম প্রচেষ্টায় তা ব্যর্থ হয়।

স্মরণাতীতকাল থেকে চলে আসা অলিখিত রীতি-ঐতিহ্য, নাচ-গান-বাদ্যযন্ত্রসহ বিভিন্ন ধরনের ললিত কলা, সামাজিক রেওয়াজ, আচার-অনুষ্ঠান ও উৎসব, প্রকৃতি সম্পর্কিত লোকজ জ্ঞান, ঐতিহ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত সামগ্রী প্রস্তুতির জ্ঞান ও দক্ষতা ইত্যাদি বিষয় অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অন্তর্ভুক্ত।

২০২২ সালে পুনরায় আবেদন জমাদানের সুযোগ দেয়া হলে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে ও প্যারিসে বাংলাদেশ দূতাবাসের সহযোগিতায় সম্পূর্ণ আবেদন নতুনভাবে প্রস্তুত করা হয়।

বাংলাপিডিয়ার তথ্য সূত্রে , ১৯১৯ সালের দিকে রিকশা মিয়ানমার থেকে চট্টগ্রামে এসে পৌঁছে, কথিত আছে। তবে তখনো ঢাকা এবং অন্যান্য শহরে চট্টগ্রাম থেকে রিকশা আসেনি। ঢাকায় রিকশা আসে কলকাতা থেকে। কলকাতায় রিকশা প্রথম প্রচলিত হয় বিশ শতকের তিনের দশকে।

নারায়ণগঞ্জ এবং নেত্রকোণা (ময়মনসিংহ) শহরে বসবাসরত ইউরোপীয় পাট রপ্তানিকারকরা তাদের ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য ১৯৩৮ সালে প্রথম কলকাতা থেকে রিকশা আমদানি করে। এই যান ঢাকার অধিবাসীদের মধ্যে ব্যাপক কৌতূহল জাগায়, সে সময় ঢাকার লোকেরা ঐতিহ্যগত ঘোড়ার গাড়ি, পালকি, এবং শহরের খালে নৌকা ব্যবহার করতেন। শুরুর দিকে ‘সাইকেল রিকশা’ গ্রহণযোগ্য বাহন হিসেবে তেমন জনপ্রিয়তা অর্জন করেনি।

রিকশাচিত্র ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। তাই এই ঐতিহ্যকে বাঁচাতে ইউনেসকো এই বাহনকে ইনটেনজিবল কালচারাল হেরিটেজ ঘোষণা করল।

এর আগে বাংলাদেশের বাউলগান (২০০৮), জামদানি বুননশিল্প (২০১৩), মঙ্গল শোভাযাত্রা (২০১৬) ও শীতলপাটি বুননশিল্পের (২০১৭) পর পঞ্চম বিমূর্ত ঐতিহ্য হিসেবে ইউনেসকোর ‘ইনটেনজিবল কালচারাল হেরিটেজ হিসেবে স্বীকৃতি পায়।