রোজার শেষদিকে বাজারে পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি: ভোগান্তিতে ক্রেতারা

টুইট ডেস্ক: রোজার শুরুতে বাজারে প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম ছিল স্থিতিশীল। তবে শেষ দিকে এসে পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে ব্রয়লার মুরগির দাম মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজি প্রতি ৪০ টাকা বেড়েছে।

শুক্রবার বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ২২৫ থেকে ২৩০ টাকায়। খামারিরা জানাচ্ছেন, মুরগির বাচ্চার দাম বৃদ্ধি ও সরবরাহ কমে যাওয়ার কারণে ব্রয়লারের দাম বাড়ছে। এছাড়া মুরগির খাবারের মূল্যবৃদ্ধিও একটি বড় কারণ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতি বছর রমজানের শেষে ব্রয়লার মুরগির দামে এমন বৃদ্ধি লক্ষ করা যায়। শবে কদর ও ঈদকে কেন্দ্র করে মুরগির চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা দাম বাড়াচ্ছেন।

লোহাগাড়ার পোলট্রি খামারি ইয়াসির উদ্দিন জানান, বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হয়েছে। ব্রয়লারের বাচ্চার সরবরাহ কমিয়ে দিয়ে দাম বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে এক দিন বয়সি ব্রয়লার বাচ্চার দাম ৬৫ টাকার বেশি। খাবারের দামও গত বছরের তুলনায় প্রায় দেড় গুণ বেড়েছে। ফলে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

পাইকারি বাজারে ভোজ্যতেলের দাম কিছুটা কমলেও খুচরা বাজারে এর কোনো প্রভাব পড়েনি। সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে তেল বিক্রি হচ্ছে। খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা জানান, আমদানি বৃদ্ধি ও প্রশাসনের কঠোর নজরদারির কারণে পাইকারি বাজারে তেলের দাম কমেছে। তবে খুচরা বাজারে লিটারপ্রতি তেল ১৭৫ টাকার স্থলে ১৮৫ থেকে ১৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রমজানের শেষ দিকে সব ধরনের সবজির দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন, মুলা-প্রায় সব সবজির দাম ৫০-৬০ টাকার মধ্যে। গ্রীষ্মকালীন সবজির মধ্যে পটোল ও ঢেঁড়সের দাম ৮০ থেকে ১০০ টাকা। করলা, কচুর লতি ও কচুরমুখীর দামও অনেকটা বেড়েছে।

বাজারে মাছের দাম তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল থাকলেও কিছু প্রজাতির মাছের দাম চড়া। রুই, কাতলা, কালিবাউশ, চিংড়ি, টেংরা, বোয়ালসহ বিভিন্ন মাছের দাম আকারভেদে ২৮০ থেকে ১৬০০ টাকা পর্যন্ত।

রোজার শেষদিকে পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে ব্রয়লার মুরগি ও ভোজ্যতেলের দামের এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধি অনেকেরই হাতের নাগালের বাইরে নিয়ে যাচ্ছে। খামারিরা সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর ব্যবস্থা এখনও দেখা যাচ্ছে না।