ছাত্র আন্দোলনে হামলায় বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ ২ মৃত ব্যক্তি আসামি

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার অভিযোগে করা মামলায় প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মান্নানকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া, মামলায় আরও একজন মৃত ব্যক্তি হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য সাইদুর রহমান বাদলকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
গত ২৩ মার্চ রাজশাহী নগরের বোয়ালিয়া থানায় আবদুল আলীম দুলাল নামে এক তরুণ মামলাটি করেন। মামলার প্রধান আসামি রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, দ্বিতীয় আসামি রাজশাহী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান বাদশার ছেলে মাহমুদুর রহমান দীপন।
মামলার ৫৮ নম্বর আসামি করা হয়েছে রাজশাহী মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ও আওয়ামী লীগ নেতা প্রয়াত আবদুল মান্নানকে। এছাড়া, ১২৪ নম্বর আসামি করা হয়েছে সাবেক ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা প্রয়াত সাইদুর রহমান বাদলকে। মামলায় মোট ১২৭ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ৩০০-৩৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
বাদী আবদুল আলীম জামায়াত-সমর্থিত শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কর্মী এবং তাঁর ভাই শফিকুল ইসলাম জামায়াতে ইসলামীর কর্মী বলে জানা গেছে। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজশাহী নগরের কল্পনার মোড়ে আলীম গুলিবিদ্ধ হন।
প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মান্নান একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং এ বছর ১৭ জানুয়ারি ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তাঁকে পরদিন রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়। আর সাইদুর রহমান বাদল গত ১৯ আগস্ট ভারতীয় সীমান্তে অবস্থানকালে মারা যান। ৫ আগস্ট বিকালে তিনি পালিয়ে গিয়ে সীমান্তে আত্মগোপন করেছিলেন। পরের দিন বাড়িতে এনে তার দাফন করা হয়।
মৃত ব্যক্তিকে আসামি করার বিষয়ে জানতে চাইলে বাদীর বড় ভাই শফিকুল ইসলাম জানান, ‘মামলার সিদ্ধান্ত তাঁদের মুরব্বিরা নিয়েছেন এবং এ বিষয়ে মহানগর জামায়াতের সাংগঠনিক সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলতে হবে।’
রাজশাহী মহানগর জামায়াতের মিডিয়া ও প্রেস সেক্রেটারি আশরাফুল আলম ইমন জানিয়েছেন, ‘মামলাটি জামায়াতের সাংগঠনিক সিদ্ধান্তে হয়নি এবং প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মান্নানের মৃত্যু সম্পর্কে আমরা অবগত।’
বোয়ালিয়া থানার ওসি মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, ‘আসামির তালিকায় মৃত ব্যক্তি আছেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। যদি সত্য হয়, তাহলে অভিযোগপত্র দাখিলের সময় তাঁদের বাদ দেওয়া হবে।’