ভাতা না নেওয়া ১,৩৯৯ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্ধানে সরকার
টুইট ডেস্ক: সরকারি গেজেট অনুযায়ী, দেশে মোট ৬,৭৫৭ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভুক্ত রয়েছেন। এর মধ্যে ৫,৩৫৮ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার পরিবার নিয়মিত ভাতা গ্রহণ করছেন। তবে অবশিষ্ট ১,৩৯৯ শহীদ মুক্তিযোদ্ধার পরিবার এখনো পর্যন্ত ভাতা গ্রহণের জন্য আবেদন করেননি।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বীর প্রতীক এ তথ্য জানিয়েছেন।
উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বলেন,
“এই শহীদ পরিবারগুলো কোথায়, কেন তারা ভাতা নিচ্ছেন না, তা রাষ্ট্র জানে না। রাষ্ট্রের উচিত তাদের খুঁজে বের করা এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, অনেক শহীদ মুক্তিযোদ্ধার পরিবার গ্রামের কৃষক ও শ্রমিক শ্রেণির হতে পারেন, যারা সরকারি সুবিধা গ্রহণের প্রক্রিয়া সম্পর্কে অবগত নন। এ কারণে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এসব পরিবারকে খুঁজে বের করে রাষ্ট্রীয় সুবিধার আওতায় আনতে।
এছাড়া, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের শনাক্তকরণ প্রক্রিয়াও চলমান রয়েছে। এ পর্যন্ত ৯০ হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে, যার মধ্যে ৪০ হাজারের ডাটা এন্ট্রি সম্পন্ন হয়েছে এবং বাকি ৫০ হাজারের কাজ প্রক্রিয়াধীন। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের স্বেচ্ছায় নাম প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো হয়েছে; যারা স্বেচ্ছায় নাম প্রত্যাহার করবেন, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে না।
সরকার রণাঙ্গনের প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ও সহযোগী মুক্তিযোদ্ধাদের চিহ্নিত করার কাজও শুরু করেছে। যেসব কৃষক-শ্রমিক, সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ, নৌ কমান্ডো, আনসার, ইপিআর সদস্যরা সরাসরি যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন, তাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হবে।
অপরদিকে, যারা বিদেশে জনমত সৃষ্টি, স্বাধীন বাংলা ফুটবল টিমের খেলোয়াড়, স্বাধীন বাংলা বেতারের শিল্পী, সাংবাদিক, চিকিৎসক, নার্স ও চিকিৎসা সহকারী হিসেবে অবদান রেখেছেন, তাদের ‘সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে চিহ্নিত করার বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রেখে এবং কোনো রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ছাড়া মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণ ও সম্মানিত করতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। এই উদ্যোগগুলো বাস্তবায়িত হলে দীর্ঘদিনের বঞ্চনার অবসান ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে।