আজ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস

টুইট ডেস্ক: আজ ২৬শে মার্চ, বাঙালির গৌরবময় স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে শুরু হয়েছিল বাঙালির চূড়ান্ত মুক্তির লড়াই। ২৫শে মার্চ রাতের নৃশংস হামলার পর, বাঙালির হৃদয়ে জ্বলে ওঠে স্বাধীনতার অগ্নিশিখা, যে যুদ্ধে আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয় আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ।

এদিনকে যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করতে রাষ্ট্রীয়ভাবে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক কর্মসূচি। প্রত্যুষে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হয়। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় সরকারি ও বেসরকারি ভবনগুলোতে।

ঢাকাসহ সারাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনাগুলোতে আলোকসজ্জা করা হয়েছে। জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে শুরু করে সর্বস্তরের জনগণের পক্ষ থেকে। স্মৃতিসৌধের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে, বসানো হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার ও সিসিটিভি ক্যামেরা।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দিবসের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টার নেতৃত্বে বীরশ্রেষ্ঠ পরিবারের সদস্য, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধারা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পাশাপাশি বিদেশি কূটনীতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন এবং সাধারণ জনগণও শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন।

দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, ছাত্র-ছাত্রীদের কুচকাওয়াজসহ নানা কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপগুলো জাতীয় পতাকা ও আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে।

সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় সংবাদপত্রসমূহ দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করছে। টেলিভিশন ও রেডিওতে মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠান প্রচার করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘরসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা এবং প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনসহ নানা আয়োজন করেছে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা প্রদান করা হবে। মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডায় দেশের শান্তি ও অগ্রগতি কামনায় বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে। হাসপাতাল, বৃদ্ধাশ্রম, জেলখানা ও শিশু পরিবারের জন্য বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এছাড়া, দেশের সকল শিশুপার্ক ও জাদুঘর বিনামূল্যে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। চট্টগ্রাম, মোংলা, পায়রা ও ঢাকার সদরঘাটসহ বিভিন্ন বন্দরে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের জাহাজগুলো সাধারণ জনগণের পরিদর্শনের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে।

প্রবাসেও বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোতে দিবসটি উদযাপন করা হচ্ছে।

এই মহান দিনে বীর শহীদদের স্মরণে, জাতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছে তাদের আত্মত্যাগকে, যাদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতা।