যমুনা রেলসেতুর উদ্বোধন: রেল যোগাযোগে নতুন যুগের সূচনা

টুইট ডেস্ক: দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আজ (১৮ মার্চ ২০২৫) দেশের বৃহত্তম রেলসেতু, যমুনা রেলসেতু, উদ্বোধন করা হয়েছে। টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার ইব্রাহিমাবাদ রেলস্টেশন চত্বরে বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে সেতুটির উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনিচি, জাইকার দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের মহাপরিচালক ইতো তেরুয়ুকি, টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক শরিফা হক ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মিজানুর রহমানসহ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

উদ্বোধনের পর দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে ইব্রাহিমাবাদ স্টেশন থেকে একটি বিশেষ ট্রেন সিরাজগঞ্জের সয়দাবাদ স্টেশনের উদ্দেশ্যে সেতু পার হয়ে যায়, যা সেতুটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনকে চিহ্নিত করে।

নতুন এই রেলসেতুটি যমুনা বহুমুখী সেতুর ৩০০ মিটার উজানে অবস্থিত। ৪.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতুটি দেশের প্রথম ডুয়েলগেজ ডাবল ট্র্যাক রেলসেতু, যা ৫০টি পিলার ও ৪৯টি স্প্যানের ওপর নির্মিত। আধুনিক ইস্পাত প্রযুক্তির মাধ্যমে নির্মিত এই সেতুর স্থায়িত্বকাল ধরা হয়েছে ১০০ বছর।

সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১৬,৭৮০.৯৬ কোটি টাকা, যার ৭২.৪ শতাংশ অর্থায়ন করেছে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা), বাকি অর্থ বাংলাদেশ সরকার প্রদান করেছে। জাপানের ওটিজি ও আইএইচআই যৌথভাবে সেতুটি নির্মাণ করেছে।

নতুন সেতুর মাধ্যমে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলসহ অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে রেল যোগাযোগের নতুন দ্বার উন্মোচিত হলো। এটি ট্রেন চলাচলের সময় কমাবে এবং পণ্য পরিবহন সহজ করবে, যা দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

উল্লেখ্য, আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগে, ১২ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী থেকে সিল্ক সিটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি প্রথমবারের মতো যাত্রী নিয়ে যমুনা রেলসেতু পার হয়ে ঢাকায় পৌঁছায়। পরীক্ষামূলকভাবে চালানোর সময় একটি ট্রেন ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে সেতুটি অতিক্রম করেছিল।

নতুন এই রেলসেতু দেশের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন দিগন্তের সূচনা করবে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।