বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন গোয়েন্দা প্রধানের উদ্বেগ

টুইট নিউজ : বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা ডিরেক্টর অব ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স (ডিএনআই) প্রধান তুলসী গ্যাবার্ড। ভারতের নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত বৈশ্বিক গোয়েন্দা প্রধানদের সম্মেলনে অংশ নেওয়ার সময় এনডিটিভি ওয়ার্ল্ডকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও উগ্রবাদী তৎপরতা

গ্যাবার্ড বলেন, বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন মার্কিন প্রশাসনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উদ্বেগের কারণ। বিশেষ করে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের সহিংসতা ও নিপীড়ন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সজাগ দৃষ্টি রাখছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে ইসলামি উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বৃদ্ধি বিশ্বশান্তির জন্য হুমকিস্বরূপ।

যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ ও কূটনৈতিক আলোচনা

গ্যাবার্ড জানান, ট্রাম্প প্রশাসন বিশ্বব্যাপী ইসলামি উগ্রবাদ দমনে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং এই বিষয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে। যদিও আলোচনা প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে, তবে এটি যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান কূটনৈতিক অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার সম্পৃক্ততা ও ভারতীয় উদ্বেগ

এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে উগ্রবাদী সহিংসতা ও ধর্মীয় নিপীড়নের পাশাপাশি পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর সঙ্গে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ভারতের সীমান্তবর্তী বিশেষ করে শিলিগুড়ি করিডোরের কাছাকাছি এলাকায় আইএসআই কর্মকর্তাদের তৎপরতা তাকে উদ্বিগ্ন করেছে। তিনি বলেন, ভারতবিরোধী গোষ্ঠীগুলো যেন বাংলাদেশকে ব্যবহার করে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাতে না পারে, সে বিষয়ে ভারত সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছে।

৫ আগস্টের অভ্যুত্থান ও ভারতীয় গণমাধ্যমের ভূমিকা

গত বছরের ৫ আগস্ট বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ভারতীয় গণমাধ্যম বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

প্রতিবেদন অনুসারে, অভ্যুত্থানের সময় প্রায় দেড় সহস্রাধিক মানুষ নিহত হলেও ভারতীয় গণমাধ্যম এ বিষয়ে নীরব থেকেছে। তবে ৫ আগস্টের পরবর্তী ঘটনাগুলো অতিরঞ্জিতভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে, যা নিয়ে ঢাকা একাধিকবার আপত্তি ও উদ্বেগ জানিয়েছে।

বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা, উগ্রবাদী তৎপরতা এবং আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর উদ্বেগ- এসব বিষয় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। ভবিষ্যতে কূটনৈতিক আলোচনা কীভাবে অগ্রসর হয়, তা সময়ই বলে দেবে।