আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশকে সহযোগিতার আহ্বান আইজিপির
টুইট ডেস্ক: বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম সম্প্রতি গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস এলাকায় শিল্প পুলিশ-২ ইউনিটের বিশেষ কল্যাণ সভায় বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান, পুলিশকে তাদের দায়িত্ব পালনে সহযোগিতা করতে এবং তাদের ওপর আক্রমণ না করতে।
তিনি বলেন, “আমাদের কাজ করতে দেন, অনুগ্রহ করে আমাদের ওপর আক্রমণ করবেন না। আমরা এই সমাজের, আমরা এই দেশেরই নাগরিক। কীভাবে সমাজে স্থিরতা আসবে, যদি আমরা কাজ না করতে পারি। আমরা কাজ করতে না পারলে সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে কীভাবে আগাব।”
আইজিপি বাহারুল আলম উল্লেখ করেন, ৫ আগস্টের পর পুলিশের কিছু সিনিয়র কর্মকর্তার অতিউৎসাহ ও রাজনৈতিক আনুগত্যের কারণে পুরো পুলিশ বাহিনী কলঙ্কিত হয়েছে। তিনি বলেন, “সারা বিশ্ব এখন বলে যে, বাংলাদেশ পুলিশ তারা এত নির্মম কীভাবে হলো?”
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) সকাল ১০টায় গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস এলাকায় শিল্প পুলিশ-২ এর ইউনিটের বিশেষ কল্যাণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে আইজিপি গুজবে কান না দিতে এবং ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে জড়িত না হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি জানান, ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন-ভাতা ও ঈদ বোনাস ২০ মার্চের মধ্যে দেওয়ার বিষয়ে মালিকদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। ঈদের ছুটিতে শ্রমজীবী মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে বাড়ি যেতে পারেন, সে জন্য পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করছে। তিনি শ্রমিকদের রাস্তা অবরোধ না করার এবং জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না করার অনুরোধ করেন। এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানান।
আইজিপি বাহারুল আলম আরও বলেন, পুলিশ আইন প্রয়োগ করতে গেলে আক্রমণের শিকার হচ্ছে; আসামি ছিনিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ট্রাফিক পুলিশ আইন মেনে চলার পরামর্শ দিলে তাদের ওপরও চড়াও হচ্ছে। আইন না মানার প্রবণতা সম্পর্কে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং বলেন, “একটা সভ্য দেশ পুলিশ ছাড়া চলতে পারে না। দেশের মানুষকে বুঝতে হবে, দেশের অপরাধ দমন যদি না করা হয়, শৃঙ্খলা যদি ফিরে না আসে, তাহলে কোনো নাগরিক শান্তিতে থাকতে পারবে না।”
উল্লেখ্য, বাহারুল আলম ২০২৪ সালের ২০ নভেম্বর পুলিশের মহাপরিদর্শক হিসেবে নিয়োগ পান। এর আগে তিনি পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) প্রধানসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত তিনি জাতিসংঘ সদর দপ্তরের শান্তিরক্ষা বিভাগে পুলিশ লিয়াজোঁ অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০১৫ সালে আফগানিস্তানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের সিনিয়র পুলিশ অ্যাডভাইজার হিসেবেও কাজ করেন। এর আগে তিনি ক্রোয়েশিয়া, সার্বিয়া, কসোভো ও সিয়েরা লিওনে দায়িত্ব পালন করেন।